কক্সবাজারে বিমান বন্দর আন্তর্জাতিক উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Coxs Airport 01

স্টাফ রিপোর্টার:
কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঢাকার গণভবনের সেমিনার হল থেকে ভিডিও কনফারেন্স’র মাধ্যমে তিনি এ উদ্বোধন করেন।

এ উপলক্ষে কক্সবাজার বিমান বন্দরের পার্কিং এলাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে সম্প্রতি বন্যায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

তিনি বলেন, বন্যা দূর্গতের জন্য সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক যোগাযোগ ও দূর্গতের ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণ করে দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসেই দেশের প্রতিটি জায়গায় উন্নয়নে হাত দিয়েছে। কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ কাজ শেষ হলে পর্যটন শহরের সাথে পুরো বিশ্বের সম্পর্ক স্থাপিত হবে। পর্যটক সহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক বড় বিমানগুলো সহজে বন্দরে অবতরণ করতে পারবে। ফলে কক্সবাজারের বাণিজ্যিক সুবিধা আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশ এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিমান বন্দর সম্প্রসারণের কারণে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জন্য কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলে বিশাল এলাকার উপর উন্নতমানের ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরি হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবারকে আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসন করা হবে। ইতোমধ্যে পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। পুনর্বাসিত এলাকায় স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ প্রয়োজনী সব সুবিধা থাকবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনকালে তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামাত জোট আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করে মানুষ মেরেছেন। তারা দেশকে পিছিয়ে দিতে চেয়েছিল। অথচ আওয়ামীলীগ সরকার দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে, নিবে। এছাড়া, রামু বৌদ্ধ বিহারও তারা জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমরা সেটিকে আরও আধুনিক দৃষ্টিনন্দন করে নির্মাণ করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের দোহাজারী হয়ে কক্সবাজারের ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণটি দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া। এটি এতোদিন কেন বাস্তবায়িত হয়নি ‘আমার জানা নেই’। তবে এবার আমরা ভূমি অধিগ্রহণের কাজও সম্পন্ন করেছি। শীঘ্রই দু’লাইনের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে কক্সবাজারের বাণিজ্যের দ্বার আরও উন্মোচিত হবে।

বক্তব্য শেষে বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নিতকরণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কক্সবাজারে ফলক উন্মোচন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতিদেরকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বড় স্ক্রিনে দেখানো হয়। প্রধানমন্ত্রীও কক্সবাজার বিমান বন্দরে উপস্থিতিদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেখেন।

এর আগে অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত করেন কক্সবাজার বিমান বন্দর জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা আতাউর রহমান।
এরপর ঢাকার গণভবন থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনাকারী পর্যটন সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী বিমান বন্দরের কাজের বিবরণ দেন।

তিনি জানান, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার আওতায় প্রথম পর্যায়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে বর্ধিতকরণ ও প্রশস্তকরণের কাজ করা হবে। পুরো কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ৩০ মাস। রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছয় হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে বাড়িয়ে ৯ হাজার ফুট করা হবে। প্রস্থ বাড়িয়ে ১৫০ ফুট থেকে করা হবে ২০০ ফুট। স্থাপিত হবে নতুন ভিওআর, ডিএমই, আইএলএস, এয়ার ফিল্ড গ্রাউন্ড ও লাইটিং সিস্টেম। প্রথম ধাপের এই উন্নয়ন কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, সরকারী পদস্থ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক সহ সুশীল সমাজের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment
আরও পড়ুন