ঘূর্ণিঝড় মোখা

কক্সবাজারে ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত: ক্ষত-বিক্ষত সেন্টমার্টিন

fec-image

ব্যাপক সংখ্যক গাছ ছাড়াও আধাপাকা, টিন শেড সকল ঘর ভেঙ্গে গেছে। উড়ে গেছে ছাউনী। মোখার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সেন্টমার্টিন দ্বীপে হয়েছে বলে স্বীকার করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

মিয়ানমার মুখি ঘূর্ণিঝড় মোখার তান্ডবে কক্সবাজার বড় কোন হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ১২ হাজার ঘর।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোখার হাত থেকে শেষ রক্ষা পায়নি দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। পুরো দ্বীপটি ক্ষত-বিক্ষত মোখার আঘাতে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, প্রাথমিক তথ্য মতে ব্যাপক সংখ্যক গাছ ভেঙ্গে গেছে। জেলায় ১২ হাজার ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘর ২ হাজারের বেশি। এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে জোয়ারের পানিতে নতুন করে বেড়িবাঁধের কিছু এলাকাও ভেঙ্গে গেছে বলে জানা গেছে। তা নির্ধারণেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, মোখার আঘাতে দ্বীপের ১২ শতাধিক আধাপাকা টিন শেড ঘর, ছোট্ট মানের কটেজ বাতাসের বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। দ্বীপের ৭৫ শতাংশ গাছ ভেঙ্গে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। সাগরের পানি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে একটু বেশি হলেও কোথাও প্লাবিত হয়নি। একজন নারী গাছ চাপায় আহত সহ ছোট খাট আঘাত ছাড়া নিহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দ্বীপের দক্ষিণ, পূর্ব অংশে। যেখানে ব্যাপক সংখ্যক গাছ ছাড়াও আধাপাকা, টিন শেড সকল ঘর ভেঙ্গে গেছে। উড়ে গেছে ছাউনী। মোখার আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সেন্টমার্টিন দ্বীপে হয়েছে বলে স্বীকার করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দ্বীপে গিয়ে ক্ষতির সার্বিক চিত্র বা পরিমাণ জানা যাবে।

এছাড়া মোখার আঘাতের কবলে পড়েছে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়ন, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানী, পাটুয়ারটেক, সোনাপাড়া এলাকা। যেখানেও ব্যাপক সংখ্যক ঘর ও গাছ ভেঙ্গে গেছে।

টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম জানিয়েছেন, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, বাহারছড়া ইউনিয়নের গাছের উপর তান্ডব চালিয়েছে মোখা। এসব এলাকার ৩০ শতাংশ গাছ ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া বহু ঘর ভেঙ্গে গেছে। এর সংখ্যা নির্ধারণে কাজ চলছে।

কক্সবাজারস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানিয়েছেন, কক্সবাজারে ৫৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৩২ কিলোমিটার অরক্ষিত ছিল আগে থেকেই। এই ৩২ কিলোমিটারের বাইরে কোন অংশে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিনা দেখা হচ্ছে।

কক্সবাজার আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, রবিবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। এরপর বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েছে।

এদিকে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ৩ লাখ মানুষ বিকাল ৫ টা থেকে আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে ফিরে যেতে শুরু করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষতি, ঘূর্ণিঝড়, প্রাণহানি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন