ক্যাম্পে ব্যাপক করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি, রোহিঙ্গারা অসচেতন

fec-image

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত এক রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এমনিতেই রোহিঙ্গারা অসচেতন। করোনাভাইরাস বিশ্বাসই করতে চায় না।

একাধিক রোহিঙ্গাকে করোনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানায়, যাদের ঈমানের কনজুরি আছে তারা করোনার কথা বলবে। জন্ম-মৃত্যু আল্লাহর হাতে।আমরা করোনা বিশ্বাস করিনা। একমাত্র আল্লাহকে বিশ্বাস করি। আমরা মজলুম। আর মজলুমদের সাথে আল্লাহ আছেন।

স্থানীয়রা, ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্যাপক করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। এমনই পরিস্থিতিতে উখিয়ার সাধারণ মানুষ নিজ উদ্যোগে কিছু প্রতিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো রয়ে গেছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে।

সাধারণত রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে অলস সময় কাটায়। ময়নাঘোনা ১১ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা জিয়াবুর রহমান বলেন, এনজিওরা আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী যেমন-তেল, পেঁয়াজ, চাল, ডাল ইত্যাদি দিয়ে থাকেন। তবে তারা আমাদের মাছ মাংস দেন না। মাস-মাংস খেতে আমরা কিছু রোহিঙ্গা স্থানীয়দের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন রকমের কাজ করে থাকি। করোনার কারণে আজ আমরা আগের মতো বের হতে পারি না। তাই আমাদের কষ্ট হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা শ্রম বিক্রি করে কিছু আয় উপার্জন করতো, এখন তা মোটামুটি বন্ধ। এনজিওদের থেকে নিয়ে দিনে এনে দিন খাওয়ায় করোনা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্যে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে রোহিঙ্গারা।

সরেজমিন ময়নাঘোনা ক্যাম্পে কোনো রোহিঙ্গাকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায় নাই।তারা সামাজিক দুরত্বও মানছেন না। যার কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এক প্রকার আড়ালেই রয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যেকোনো সময়ে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

ঘুমধুমের স্থানীয় বাসিন্দা জহির আহমদ বলেন, দেরিতে হলেও রোহিঙ্গাদের জন্যে আলাদা আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। এরপরও তারা অত্যন্ত অসচেতন। তাছাড়া এনজিওদের মাধ্যমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সংক্রমিত হচ্ছে। দিন দিন এনজিওকর্মী ও রোহিঙ্গারা করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে। এনজিওরা ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে উখিয়ায় বিভিন্ন ভাড়া বাসায় উঠেছে। ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানান দিতে কোনো এনজিওর তৎপরতা তেমন দেখা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, করোনা সংক্রমণের জন্যে যেসব কারণ দায়ী তার সব কিছু ক্যাম্পে বিদ্যমান।ক্যাম্পে অস্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন ব্যবস্থা, অতিরিক্ত জনসমাগম, স্বাস্থ্যকর উপকরণের অভাব এবং শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব করোনা সংক্রমণের প্রধান কারণ। রোহিঙ্গাদের পক্ষে উন্নত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব না হওয়ায় তারা সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের সচেতনতা তৈরিসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা একান্ত দরকার। তাদের ব্যাপারে উদ্যোগ না নিলে বড় অঘটনের আশঙ্কা এড়ানো যাবে না।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস, রোহিঙ্গা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন