ক্যাম্প পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করছে রোহিঙ্গারা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ময়লা আবর্জনামুক্ত রাখতে কাজ করে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী রোহিঙ্গারা। শিক্ষিত বেকার যুবক ও বিভিন্ন বয়সের রোহিঙ্গাদের নিয়ে গঠিত ভয়েস অব রোহিঙ্গা নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা ঘন বসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে ময়লা আবর্জনামুক্ত ও পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে বিভিন্ন ধরনের কাজ কর্ম করে থাকে।
২০১৭ সালে সেনা অভিযানের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের পেছনে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। বিভিন্ন এনজিও থেকে পাওয়া ত্রাণ ও রেশন সামগ্রী ক্যাম্পের কুড়ে বাসায় পৌছে দেওয়া, নালা-নর্দমা স্প্রে করা, টয়লেট পরিস্কার করা, মল-মুত্র দ্বারা ভর্তি হয়ে যাওয়া সেপটিক ট্যাংক পরিস্কার করে দেয়া, ক্যাম্প পরিচালনায় ক্যাম্প ইনচার্জের বিভিন্ন কাজ কর্মে সহায়তা করা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও কর্মীরা পথ হারিয়ে ফেললে সঠিক রাস্তায় পৌছে দেয়া, ক্যাম্প ইনচার্জের কেন্দ্র থেকে পাওয়া গাছ-বাস নিয়ে যাদের মিস্ত্রী খরচ দেওয়ার সমর্থ নেই তাদের কুঁড়ে বাসা তৈরি করে দেয়া, মানবিক কারণে আশ্রয় পাওয়া দেশ-বাংলাদেশের আইন-কানুন মেনে চলার পরামর্শ দেয়া ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখাসহ সেবামূলক এসব কাজ বিনা বেতনে করে আসছে ভয়েস অব রোহিঙ্গা নামক এই স্বেচ্ছাসেবকগণ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত মাওলানা হাফেজ তোহা বলেন, এই ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে বেশি লোকের বসবাস হওয়ায় প্রায় সময় ময়লা-আবর্জনা জমে যায় ও সেপটিক ট্যাংক তাড়াতাড়ি ভর্তি হয়ে যায়। আর এতে ছেলে-মেয়েসহ ছোট বাচ্চারা কষ্ট পায়। তাই এখানে রোহিঙ্গারা শলা-পরামর্শ করে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের দ্বারা গঠিত টিম ভয়েস অব রোহিঙ্গাতে রয়েছে ছোট, বড়, শিক্ষিত ও বেকার যুবকসহ অসংখ্য লোক। মাওলানা তোহা আরো বলেন, আমি নিজেও মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের সময়, মিয়ানমারের মিলিটারি বাহিনীর গুলিতে ডান পা হারিয়েছি।
এখন আমরা বাংলাদেশ সরকারের অসংখ্য সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছি। এই ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে বেশি লোকের বসাবাস হওয়ায় হঠাৎ ময়লা-আবর্জনা জমে থাকে। বাথরুম ভর্তি হয়ে ছোট বাচ্চারা কষ্ট পায়। এ কারণে আমরা কিছু রোহিঙ্গা আলেমরা শলাপরামর্শ করে নিজের জাতির কল্যাণের জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করিছি।
ভয়েস অব রোহিঙ্গা টিমের সদস্যরা বলেন, মহতি কাজের উদ্যোগে আমাদের উৎসাহ ও পরামর্শ দেন ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) মেজিস্ট্রেট রাশেদ। তিনি সবসময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহযোগিতা তথা সলাপরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের হেলথ কো-অর্ডিনেটর ডাঃ আবু তোহা মো. আর হক ভূইয়া বলেন, রোহিঙ্গা ডেঙ্গু রোগ যেন ছড়াতে না পারে সে ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি আইএনজিও , এনজিও, রোহিঙ্গা কমিউনিটি লিডার, রোহিঙ্গা বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন এক সাথে কাজ করছে।