খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও কর্মবিরতি


“সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চাই, স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা চাই” এই জোরালো স্লোগানকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে কর্মরত সাংবাদিকরা নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও প্রান্ত থেকে আগত সংবাদকর্মীরা অংশ নেন। কর্মসূচিতে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, এবং জেলা সদরসহ উপজেলার সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে সংহতি প্রকাশ করেন।
মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকরা চার দফা দাবি তুলে ধরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহরিয়ার ইউনুস, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এর জেলা প্রতিনিধি জয়ন্তী দেওয়ান, কালের কণ্ঠ মাল্টিমিডিয়া ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর জেলা প্রতিনিধি খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক, এবং জিটিভি-র জেলা প্রতিনিধি হ্লাপ্রুচাই মারমাসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের ওপর নানাভাবে হুমকি-ধমকি, মিথ্যা মামলা ও শারীরিক হামলার ঘটনা ঘটছে—যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। তারা বলেন, “সাংবাদিকরা রাষ্ট্র ও সমাজের আয়না। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে।”
বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন ও সংবাদ প্রকাশের অধিকার বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার। তাই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কর্মসূচি থেকে সাংবাদিকরা অবিলম্বে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা বন্ধ, এবং হুমকি ও হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি জানান।
সাংবাদিকদের চার দফা দাবি
১. সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যার হুমকি ও লাঞ্ছনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
২. ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে রাষ্ট্র, গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে মানহানিকর প্রচারণাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা।
৩. পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকরা হয়রানি বা বাধার মুখে পড়লে দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পর্যায়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন।
৪. গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় পর্যায়ে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন।
সাংবাদিকরা আশা প্রকাশ করেন, এই চার দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন হলে মাঠপর্যায়ে সংবাদ সংগ্রহ থেকে প্রকাশ পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই তারা নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। অন্যথায় তারা আন্দোলন আরও বেগবান করার হুঁশিয়ারি দেন।