খাগড়াছড়িতে পুলিশ পাহারায় চলছে চার প্রার্থীর নিরুত্তাপ ‘নির্বাচনী ট্রেন’
মুজিবুর রহমান ভুইয়া :
প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও তাদের মিত্রদের বাদ দিয়ে খাগিড়াছড়িতে পুলিশ পাহারায় চলছে নিরুত্তাপ ‘নির্বাচনী ট্রেন’। বিরোধী জোটের অবরোধের মতো কর্মসুচির কারণে প্রার্থীরা পুলিশের সহায়তায় বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন। তারা এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা চষে বেড়াতে শুরু করেছেন পুলিশী প্রটেকশন নিয়েই। তবে কোন ভাবেই যেন নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াতে পারছেনা জেলার একমাত্র সংসদীয় আসনের এই ৪প্রার্থী।
গত শনিবার প্রতীক বরাদ্ধ পাওয়ার পরপরই সরগরম হয়ে উঠে খাগড়াছড়ির প্রধান তিন প্রার্থীর দলীয় কার্য়ালয়। এক সময়ের নিস্প্রান খাগড়াছড়ি জেলা জাতীয় পার্টির নারিকেল বাগাস্থ দলীয় কার্যালয়টি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সেখানে সকলেই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে। তারা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান শেঠকে সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে বিজয়ের লক্ষে। এমনটাই বললেন জেলা জাতীয় পার্টির নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: আবুল হোসেন।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, খাগড়াছড়িকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা ও এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে কাজ করবেন তিনি।
অন্যদিকে সব সময়ের সরগরম জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় যেন নির্বাচনী উত্তাপ ছড়াতে তাদের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে। কাল শুক্রবার দলের সকল উপজেলার সব ইউনিটের সাথে নির্বাচনী সভা করে একযোগে মাঠে নামবে সকলে। এমনটাই জানালেন খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক এস এম শফি। তিনি বলেন, প্রতীক পেয়েই আমরা নির্বাচনী মাঠে নেমেছি । কাল হবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা। নির্বাচনে চুড়ান্ত জয় নিয়ে তবে ফিরবে আমাদের নেতাকর্মীরা। নির্বাচিত হলে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাহাড়ে কাঙ্খিত উন্নয়নের মাধমে শান্তির পতাকা উড়াবেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
অপরদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমে থেমে নেই আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ। চুক্তি বিরোধী এ দলটি তাদের দলীয় প্রধান প্রসীত বিকাশ খীসাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে স্বনির্ভর বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে। ইউপিডিএফ‘র কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জল স্মৃতি চাকমা মনে করে পূর্ণস্বায়ত্বশাসন আর ভুমির প্রথাগত অধিকার পেতে পাহাড়ের বঞ্চিত জনগণ ‘হাতী’ প্রতীকে ভোট দিতে ভুল করবেনা।
আর পার্বত্য চট্টগ্রামের অপর আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সিমিতির (এমএনলারমা) কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক প্রকৌশলী মৃনাল কান্তি ত্রিপুরা ‘বই’ প্রতীক নিয়ে শুরু করেছেন নির্বাচনী লড়াই। ইতিমধ্যে নির্বাচনী মাঠে ঝড় তুলতে না পারলেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনিও।
আর নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর জন্য আবেদন করেও আবেদন গৃহিত না হওয়ায় কাগজে-কলমে মাঠে থাকা ইউপিডিএফের নেতা উজ্জল স্মৃতি চাকমা নির্বাচনী প্রচারনা চালাচ্ছেন ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসার পক্ষে।
মহেন্দ্রক্ষনের দিকে এগিয়ে যাওয়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আছে নির্বাচনী প্রতীক, রয়েছে প্রচার-প্রচারণা। নেই শুধূ নির্বাচনী উৎসব বা আমেজ। অনেকটা হতাশাগ্রস্থ নির্বাচনী মাঠ ও নিস্প্রান ভোটার। তবুও ইসির একতরফা আয়োজনে সেই মহেন্দ্রক্ষনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুলিশ পাহারায় নির্বাচনী ট্রেন কোথায় গিয়ে থামবে ? এ নির্বাচনে অর্জিত ফলাফলই বা কি কাজে আসবে জনগণের ? এমন সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে খাগড়াছড়ির সব শ্রেনীর ভোটার মহলে।