চকরিয়ার খুটাখালী বাজারে রাতদিন জুয়ার আসর ও মাদকের হাট!

fec-image

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী বাজারে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর ও মাদকের হাট। তিন তাস, মোবাইলে ছক্কাসহ বিভিন্ন আইটেমের জুয়ার আসরে লাখ লাখ টাকার কারবার চলে।

বাজারস্থ বিভিন্ন সমিতির অফিস, মার্কেট ও দোকান ঘরে এসব আসরে তালিকাভুক্ত মাস্তান, পুলিশের সোর্স, পেশাদার ছিনতাইকারী, ছিঁচকে চোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, দিনমজুরও অংশগ্রহণ করে।

এমনকি বাজারের তালগাছ তলা এলাকায় জুয়ার আসরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে মাদকের স্পট। চলছে নির্বিঘ্নে মাদক বেচাকেনা।

উঠতি বয়সিরা জুয়া ও নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এ নিয়ে অবিভাবকরা উদ্বিগ্ন। আবার জুয়ার আসরকে ঘিরে সন্ত্রাসীদের আনাগোনাও বেড়ে গেছে।

একাধিক ভুক্তভোগি জানিয়েছে, চকরিয়া থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে জুয়ার আসর চলে। অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না।

কেউ জুয়ার আসর নিয়ে মুখ খুললে এলাকার মাস্তানরা হুমকি দেয়। নানাভাবে ঝামেলা করে।

এদিকে, খুটাখালী বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে জুয়ার আসরের অনুসন্ধান পাওয়া গেছে। কোনো কোনো স্থানে জুয়ার আসর বসে সন্ধ্যার পর। আবার কোনো কোনো এলাকায় রাত-দিন ২৪ ঘণ্টাই জুয়া চলে।

হাফেজখানা সড়কের ৩টি বিল্ডিং এর আশপাশের স্পটে জুয়ার আসর বসে। এসব আসরে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী থেকে শুরু করে ছিনতাইকারী, ছিঁচকে চোর, পকেটমার, মোবাইলপার্টির সদস্য, এমনকি দিনমজুররাও অংশ নেয়। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার কারবার হয় এসব আসরে।

সরেজমিনে ঘুরে জুয়াড়িদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাফেজখানা সড়কে ইসলাম মেম্বারের বিল্ডিং, মাছ বাজারস্থ মৎস্য আড়তের কয়েকটি কক্ষে রাতদিন জুয়া চলে।

এখানকার স্পটে জুয়ার আসর চালায় শাহজান। তার সহযোগী হিসাবে আছে আরও ২ জন। প্রতিদিন জুয়ার আসর থেকে শাহজানকে দিতে হয় ৫ হাজার টাকা।

আলাপকালে শাহজানের স্পটের জুয়াড়ীরা জানায়, স্পটের জন্য থানা পুলিশকে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। এ ছাড়া সোর্স, এলাকার মাস্তান, প্রভাবশালী নেতাদেরকেও টাকা দিতে হয়।

বাজারের তালগাছ তলায় শাহবুদ্দীনের নেতৃত্বে বসে মাদকের হাট। এ স্পট চালায় সোর্স আমির সোলতান। ঘরের ভাটাটিয়া হিসাবে শাহবুদ্দীনও এই স্পটের অংশিদার।

এখানেও বিভিন্ন আইটেমের মাদকের বিকিকিনি চলে। প্রতিদিন অনেক মানুষ আসে এই স্পটে। ইতিমধ্যে এই স্পটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জমজমাট মাদকের বেচাকেনা। তাদের ছত্রছায়ায় বিক্রি হয় মদ, ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ঘর ভাড়া করে জুয়ার আসর চলে বলে শাহজান নিজেকে খুব প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর মনে করে।

ফোনে জানতে চাইলে শাহজান জুয়ার আসর বসানোর কথা অকপটে স্বীকার করে বলেন, সারাদেশেই তো অবৈধ কার্যকলাপ চলছে। আমি করলে দোষ কি?

খুটাখালী পূর্বপাড়া সড়কে আরেক স্পট চলছে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে জুয়ার আসর। এখানেও প্রতিদিন জুয়ার পাশাপাশি মাদকের আসর বসে।

এখানকার জুয়াড়িরা জানান, জুয়ার আসরের জন্য থানা পুলিশ, সোর্স, প্রভাবশালী ও মাস্তানদের টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অফিসের ভিতরে জুয়ার আসর চলে আসছে নির্বিঘ্নে।

এসব জুয়ার আসর সম্পর্কে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি শাখের মু. জুবাইর বলেন, আমার জানা মতে, বাজারে মোবাইলে ছক্কা খেলে। সেখানে কোনো জুয়া হয় কিনা জানিনা। ওসি বলেন, জুয়ার আসর বসালে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন