গ্রিসে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যের সংখ্যা বেড়ে ৩৮, পরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ

fec-image

গভীর রাতে গ্রিসে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬৬ জন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)।

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার গভীর রাতে গ্রিসের লারিসা শহরের কাছে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে হতাহত হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ ঘটনায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন গ্রিসের অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। আর দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস এ দুর্ঘটনার জন্য মানবিক ত্রুটিকে দায়ী করেছেন।

যাত্রীবাহী ট্রেনটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্স থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালোনিকি যাচ্ছিল। আর মালবাহী ট্রেনটি থেসালোনিকি থেকে লারিসা যাচ্ছিল। দেশটির ট্রেন অপারেটর হেলেনিক ট্রেন বলেছে, যাত্রীবাহী ট্রেনটি প্রায় ৩৫০ জন আরোহী নিয়ে সকাল ৭টা ২২ মিনিটে এথেন্স ছেড়েছিল। দুর্ঘটনার পর প্রায় ২৫০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস বলেন, ‘এমন মর্মান্তিক ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন কিছু না ঘটার ভান করে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে অসম্ভব। আমি এ ব্যর্থতার দায় নিচ্ছি এবং পরিবহনমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি গণতন্ত্রের একটি প্রয়োজনীয় উপাদান বলে মনে করি যে আমাদের দেশের নাগরিকেরা রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করে। এটাকে বলে রাজনৈতিক দায়িত্ব।’

দুর্ঘটনার সময় ট্রেন থেকে লাফ দিয়েছিলেন ২৮ বছর বয়সী যাত্রী স্টেরজিওস মিনেনিস। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছিলাম, এটি ছিল ১০ সেকেন্ডের দুঃস্বপ্ন। সবখানে আগুন লেগেছিল। আমরা পুড়ে যাচ্ছিলাম।’

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোটাকিস কার্যালয় দেশে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। এদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্যাথেরিনা সাকেলারোপোলু বলেছেন, তিনি মলদোভা সফর সংক্ষিপ্ত করে গ্রিসে ফিরে যাচ্ছেন।

মলদোভার রাজধানী চিসিনাউতে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গ্রিসের প্রেসিডেন্ট ক্যাথেরিনা সাকেলারোপোলু এ কথা বলেছেন।

থেসালির আঞ্চলিক গভর্নর কনস্টান্টিনোস অ্যাগোরাস্টোস বলেন, ট্রেন দুটির উচ্চগতিতে চলছিল। আরেকটি ট্রেন যে আসছে, তা কোনো চালক জানতেন না। দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের প্রথম চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। প্রথম দুই বগিতে আগুন লেগে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।

একজজন স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকর্মী ইআরটি পাবলিক ব্রডকাস্টারকে বলেন, ‘শেষ ব্যক্তিকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে থাকব। দুর্ঘটনার পর জরুরি ভিত্তিতে সরকারি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে গ্রিসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থানোস প্লেভরিস উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন