ঘুমধুম ইউপি নির্বাচন : চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্ঘুম প্রচারণা

fec-image

আসন্ন ১৪ অক্টোবর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩ ইউনিয়নের নির্বাচন। এর মধ্যে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নির্ঘুম প্রচারণা চালাচ্ছেন মেম্বারদের পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা। তারা নিজ নিজ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন গ্রামের পর গ্রাম। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ৩ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ সাঙ্গ-পাঙ্গদের সাথে নিয়ে গত ক’দিন ধরে অবিশ্রাম প্রচারণা চালাচ্ছেন।

তিনি এলাকার প্রভাবশালী চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিতি। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘুমধুমের প্রথম চেয়ারম্যান মরহুম আবদু রহিম চেয়ারম্যানের সন্তান মৌ: ছালেহ আহমদ লড়ছেন আনারস প্রতীক নিয়ে। আর অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী রশিদ আহমদ ঘোড়া প্রতীক নিয়ে এগিয়ে চলেছেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্র মতে, এ ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৯টি। ভোটারের সংখ্যা ৯ হাজার ৩ শত ১টি। পুরুষ ভোটার ৪৬৮২ ও মহিলা ভোটার ৪৬১৯টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩৪ টি। প্রার্থীদের মধ্যে জাহাঙ্গির আজিজ প্রার্থী হয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। রশিদ আহমদ হয়েছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। অপর প্রার্থী ছালেহ আহমদ ৩ নম্বর ওর্য়াড থেকে।

স্থানীয় সূত্র গুলো জানায়, এবারের নির্বাচন হবে দ্বিমূখী। প্রার্থী ৩ জন হলেও মৌ: ছালেহ আহমদ প্রথম বার প্রার্থী হওয়ায় তার পরিচিতি তেমন নেই। কিন্তু অপর দু’ প্রার্থী ধনে-মানে সমান সমান। জনপ্রিয়তায়ও কেউ কারও চেয়ে কম নয়। তবুও আওয়ামী ঘরানার প্রার্থী জাহাঙ্গির গতবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সর্মথক রশিদ আহমদকে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন। আর রশিদ আহমদ বিষয়টি নিয়ে বলেছেন তিনি গত বারেও জিতেছিলেন। কিন্ত তাকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে কৌশলে।

বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গিরের সমর্থরা বলেছেন এসব আজগুবি কথা।  সূত্র আরো জানায়, এদিকে কৌশলী রশিদ আহমদ সদ্য অনুষ্টিত উপজেলা নির্বাচনে কৌশলে নির্বাচন করেছেন। বর্তমানে নৌকা প্রতীক পাওয়া জাহাঙ্গির আজিজ সে (উপজেলা ) নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী আবু তাহেরের মটর সাইকেল প্রতীকের পক্ষে অবস্থান নেন।  সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও নিজের প্রার্থীকে জয় করতে পারেননি জাহাঙ্গির। কিন্ত রশিদ আহমদ বিএনপি হলেও তিনি নৌকা প্রতীকের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামৗ লীগ সভাপতি অধ্যাপক শফিউল্লাহকে বিজয়ী করতে হাজারো সমর্থক নিয়ে ঝাপিঁয়ে পড়েন।

আর বিএনপি-জামাতের ঘাঁটি খ্যাত ঘুমধুমে আওয়ামী প্রার্থীকে তিনি বিজয়ী করে নেন সেভাবে। অবশ্য এ নির্বাচনে বিএনপি জামাতের কোন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেননি। সে হিসেবে তিনি নিজের দলের এবং ক্ষমতাসীন দলের কাছে জনপ্রিয় একজন স্বাতন্ত্র্যতা রক্ষাকারী ব্যক্তি। প্রশাসনও তাকে সেভাবে চেনেন এবং জানেন।

সূত্র মনে করে, এবারের নির্বাচন হবে তার জন্যে আলো ছড়ানো নির্বাচন। কেননা গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও অংঙ্গ সংগঠনের সাথে নৌকা প্রতীকের অধ্যাপক শফিউল্লাহর পক্ষে নির্বাচন করার কারণে আওয়ামী পরিবার তার ( রশিদ আহমদের ) কাছে ঋণী। এ ঋণ পরিশোধ করতে এবং আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহির সাথে হাত মেলানোর কারণে দলের নেতা-কর্মীরা জাহাঙ্গির আজিজের কাছ থেকে অনেক দূরে। আর ২৭ বছর ধরে রাজনীতির পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হিসেবে  কাজ করা কৌশলী রশিদ আহমদ সবকিছু মাথায় রেখে র্নিঘুম রাত কাটিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী রশিদ আহমদের দাবি তিনি দল-মত, ধর্ম-বর্ণ, ধনী-গরীব ও নারী পুরুষ-সকলকে সাথে নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিষদ চালাতে আগ্রহী। তিনি যার সম্মান তাকে দিয়ে যে কোন সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন। মানুষের মনে আঘাত পায় এমন কোন আচরণ তিনি করবেন না। নারী, শিশু, অভাবী ও বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেবেন তিনি। তিনি আশা করছেন, সব মিলিয়ে এবারে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান হবেন।

অপর দিকে জাহাঙ্গির আজিজের সমর্থকরা মনে করেন, ঘুমধূম ইউনিয়নে আওয়ামী পরিবার তাদের জন্যে কাজ করছে। এবারেও তাদের প্রাথী বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হবেন। এলাকার লোকজন তাদের আছে থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন