তাইন্দংয়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরিপ কার্যক্রম সম্মিলিতভাবে পরিচালনা করবে ইউএন সংস্থাগুলো
নিজস্ব প্রতিনিধি, পার্বত্যনিউজ :
মাটিরাঙ্গার তাইন্দং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের উন্নয়নে ত্রাণ সংক্রান্ত সমন্বয় সভা আজ বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তাইন্দং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের জীবনমান উন্নয়নে স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ ব্যাপারে ইউএন সংস্থাগুলো সম্মিলিতভাবে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। জরিপ সংক্রান্ত প্রতিনিধি দলে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের একজন এবং খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি থাকবে। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ত্রাণ সম্পর্কিত সমন্বয় সভায় উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। সভায় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার শেখ মো. মিজানুর রহমান, পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র মো: রফিকুল আলম, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি খাগড়াছড়ি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মো. শানে আলম, গুইমারা রিজিয়নের জিটুআই মেজর আরাফাত, জামিনীপাড়া বিজিবি’র উপ-অধিনায়ক মেজর কামরুল ইসলাম ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সমন্বয় সভায় ইউএন সংস্থাগুলোর পক্ষে বক্তব্য রাখেন, ইউএনডিপি সিএইচটিডিএফ’র ডেপুটি ডাইরেক্টর প্রসেনজিৎ চাকমা ও ক্লাষ্টার লীডার হোসাইন শহিদ সুমন, তাইন্দং ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রাণ কমিটির সভাপতি বকুল কান্তি চাকমা ও সদস্য দেবব্রত চাকমা। এছাড়া অনুষ্ঠানে ইউএনডিপি, ডব্লিওএফপি এবং এফএও এবং ইউনিসেফ’র উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণায়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, মাটিরাঙ্গার তাইন্দং সহিংস ঘটনার পর সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় বিজিবি, ইউনিয়ন পরিষদ, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি খাগড়াছড়ি ইউনিটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ত্রান সহায়তা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বুধাবর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এসময় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি অগ্নিক্ষতিগ্রস্থ ৩৮ পরিবারের গৃহ নির্মাণের জন্য পরিবার প্রতি এক লাখ অনুদান ঘোষনা করেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারী ত্রাণের বাইরে তৈজসপত্রসহ গৃহস্থালীর সরঞ্জাম প্রদান করা হবে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল হতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ত্রাণ সরবরাহের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। যদি সেটি সম্ভব হয় তাহলে পরিবার প্রতি ৩ লাখ টাকা পাবে। ক্ষতিগ্রস্থদের স্থায়ী উন্নয়নে এবং ত্রাণ কার্যক্রম যাতে ওভার লেপিং না হয় সেজন্য যে সকল উন্নয়ন সংস্থা ত্রাণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চান তাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করার আহবান জানান তিনি।
ইউএন সংস্থাগুলোর পক্ষে ইউএনডিপি সিএইচটিডিএফ’র ডেপুটি ডাইরেক্টর প্রসেনজিৎ চাকমা বলেন, ইউএন সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্থদের উন্নয়নে একটি স্থায়ী উন্নয়নের কথা ভাবছে। এ জন্য ৬ থেকে ৮ সেপ্টম্বর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। জরিপ শেষে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সভা শেষে ১৬ সেপ্টম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় সভা করে তাদের ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করবে।