পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ঢেউ কক্সবাজারে

fec-image

মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ফলক ও বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল-১ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে শনিবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বপ্নের সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জমকালো আয়োজনের ঢেউ মাওয়া প্রান্তে থেমে থাকে নি। দেশের দক্ষিণ সীমান্ত কক্সবাজারেও ব্যাপক সাড়া পড়েছে।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ বিশেষ আয়োজন করে। একইভাবে জেলার ৮ উপজেলায় নানা কর্মসূচি পালিত হয়। জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা ও আনন্দ র‍্যালি ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। যেখানে সাধারণ মানুষজন আনন্দ ও উৎসাহের সহিত অংশগ্রহণ করে।

শহীদ দৌলত ময়দান ও ডিসি কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলার বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মী, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আবেগ ও উদ্দীপনার সাথে অংশগ্রহণ করে। তারা কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানসূচির সরাসরি সম্প্রচার আনন্দের সাথে উপভোগ করেন।

দৃষ্টিনন্দন আয়োজনে অংশ নিয়ে জেলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ দেশের গৌরবগাঁথায় নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে। একক সিদ্ধান্তে নিজ অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু বিশ্ববাসীর কাছে মাথা উঁচু করিয়েছে আরো একধাপ। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের মূলমন্ত্র যুগিয়ে নিজেকে নিয়েছেন নেতৃত্বের অনন্য উচ্চতায়।

এদিকে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরেই ব্যাপক প্রচারণার আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। সাজানো হয় ডিসি কার্যালয়ের বাইরের সড়ক, শহিদ দৌলত ময়দান, পৌর কার্যালয়ের সামনের অংশ, টানানো হয় ব্যানার-ফেস্টুন। উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি দেখাতে জেলা প্রশাসক চত্বরে সাঁটানো হয় বড় পর্দা।

শনিবার (২৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন সরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী সংগঠনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ, জেলা প্রশাসনের আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। মাথায় পদ্মা সেতুর ছবি সম্বলিত ক্যাপ ও পতাকা নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, স্বপ্ন নয় আজ বাস্তবতা স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সারাদেশের মতো কক্সবাজারবাসীও আনন্দিত। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানমালায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়ে ইতিহাসের অংশ হলো কক্সবাজারবাসী।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল বলেন, আজ বিশ্বের বুকে অনন্য এক বাংলাদেশের ইতিহাস লেখা হয়েছে। নতুন মর্যাদায় বাংলাদেশকে মূল্যায়নের উপলক্ষ হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করা পদ্মা সেতু। সকল পেশার মানুষ উপস্থিত হয়ে পদ্মার যাত্রার সাক্ষী হলো।

অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সোলাইমান, ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান, সাবেক এমপি অধ্যাপক এথিন রাখাইন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকী, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, জেলা যুবলীগ সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহাদুর, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়েশা সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হামিদা তাহের, পৌর প্যানেল মেয়র শাহেনা আক্তার পাখি, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

অতিথি ও আগত সকলের ভালোমন্দ দেখভাল করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বিভীষণ কান্তি দাশ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানবসম্পদ উন্নয়ন) মো. নাসিম আহমদসহ সকল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।

জেলা পুলিশের আনন্দ র‍্যালি: ‘আমার টাকায় আমার সেতু, বাংলাদেশের পদ্মা সেতু’ এই শ্লোগান নিয়ে বর্ণাঢ্য আনন্দ র‍্যালি করেছে জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে র‍্যালিটি এসপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে হলিডে মোড়ে গিয়ে শেষ হয়৷

এসময় টুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিল্লুর রহমান, পিবিআই’র পুলিশ সুপার মো. সরোয়ার আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, প্যানেল মেয়র শাহেনা আক্তার পাখি, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন, ইন্সপেক্টর (অপারেশন) নাসির উদ্দীনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

একইভাবে সাগর পাড়ে জেড স্কী মহড়া, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, মোটর শোভাযাত্রা করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন।

ট্যুরিস্ট পুলিশের সুপার মো. জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে অতিরিক্ত পুলিশ মো. রেজাউল করিম, সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এই আয়োজন স্থানীয়দের পাশাপাশি সৈকতে আগত পর্যটকদের বেশ আনন্দ দেয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, পদ্মা সেতু
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন