পার্বত্য অঞ্চলে অদৃশ্য শক্তি বলে কোনও কথা নেই: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী

fec-image

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সরকারের আইনশৃঙ্খলা অনুসরণ করেই পরিচালিত হয়ে আসছে। ব্রিটিশ আমল থেকেই পার্বত্য অঞ্চল বিশেষ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। পার্বত্য অঞ্চলে অদৃশ্য শক্তি বলে কোনও কথা নেই।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠিত হয়েছে। এ অঞ্চলের সব সংস্থা আইনশৃঙ্খলার মাধ্যমেই পরিচালিত হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলার ব্যত্যয় হলে সরকারের উন্নয়নকাজেরও ব্যত্যয় ঘটবে। আমরা আইনশৃঙ্খলা মেনে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থানে বসবাস করতে পারলেই আমাদের সার্থকতা।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষ এনেক্স ভবনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দ্বিতীয় সভায় পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের অদৃশ্য শক্তি বলে কোনও কথা নেই। কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিংয়ের বিষয়টি একনেক সভায় উপস্থাপন করা আছে। পাস হলেই আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হবে। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি শৃঙ্খলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। সম্মিলিতভাবে সবারই এতে অংশগ্রহণ থাকতে হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদেরও এগিয়ে আসতে হবে জানিয়ে কুজেন্দ্র লাল বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সব সম্প্রদায়, সব গোষ্ঠী সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মূল স্রোতধারার সঙ্গে এক হয়ে এগোতে হবে। পার্বত্য অঞ্চল শুধু নয়, পুরো বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এখানে জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায় আলাদা কিছুই থাকবে না। বাংলাদেশের উন্নয়নে সব সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

পার্বত্য অঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আরও বেশি কাজ করা হবে। দীর্ঘ বছর পর সাজেকের রাস্তাঘাট হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অবদান। তিনি না থাকলে দুর্গম অঞ্চল সাজেকের মতো জায়গায় এত দ্রুতগতিতে রাস্তাঘাট নির্মাণ করা ও বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া এবং সীমান্ত বর্ডার রোড তৈরি করা সহজ কথা নয়। শেখ হাসিনা থাকলে এই রাস্তা আরও দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বন ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের এমপি মঈন উদ্দিন, যশোর-১ আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪৮-এর এমপি জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যাঁ, উপজাতীয় শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম।

এ ছাড়া রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্ররু চৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্র্রু চৌধুরী অপু, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আমিনুল ইসলাম, পার্বত্য মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সচিব অমলেন্দু সিংহ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের সিইওরা, আঞ্চলিক পরিষেদের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দফতরে দায়িত্বরত উপসচিব এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের কর্মকর্তারা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন