‘পার্বত্য চুক্তির পরও পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের আতঙ্ক বন্ধ হয়নি’
স্টাফ রিপোর্টার:
পাবর্ত চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পরও পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের আতঙ্ক বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার আহ্বায়ক বেগম নূর জাহান। তিনি বলেন, পাহাড়ের শান্তি বিনষ্টকারী, কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।
১৯৯৭ সালে সন্তু লারমা নিজেদের স্বার্থ অর্জনের জন্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু তিনি পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি চায়নি। চুক্তির আগে পাহাড়ের মানুষ গুম, খুন অপহরণ, অস্ত্র ও সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ছিল, বর্তমানেও আছে। কিছুই পরির্বতন হয়নি। শুধুমাত্র পরির্বতন হয়েছে সন্ত্রাসী গ্রুপের নাম। এক সময় যারা শান্তিবাহিনী নামে গোপনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতো। এখন তারা জেএসএস, ইউপিডিএফ ও সংস্কারপন্থী নামে প্রকাশ করছে। তাই তারা পাহাড়ে সেনাবাহিনী চায় না।
কারণ সেনাবাহিনী থাকলে তাদের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি পার্বত্যাঞ্চলের সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের ঘোষণার বাতিল ও ২০০১সালের পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধন না করার দাবি জানান। বৃহস্পতিবার বিকালে হরতালের অংশ হিসেবে বাঙালি ভিত্তিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে পার্বত্য নাগররিক পরিষদের আহবায়ক বেগম নূর জাহান এসব কথা বলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার পার্বত্যাঞ্চলের সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের ঘোষণার বাতিল ও ২০০১সালের পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন সংশোধন না করার দাবিতে স্থানীয় বাঙালিভিত্তিক তিন সংগঠনের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল রাঙামাটিতে শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। দিনব্যাপী হরতালের সমর্থনে মাঠে ছিল পার্বত্য নাগররিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য গণশ্রমিক পরিষদের নেতাকর্মীরা।
শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও পিকেটিং করে ওই সংগঠনগুলোর নেতারা। হরতাল চলাকালে শহরের বনরূপা, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি ও কলেজ গেইট এলাকায় সড়কে ট্রায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে হরতালকারীরা। হরতালের কারণে রাঙামাটি শহরের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। অভ্যন্তরীণ রুটে অটোরিক্সসহ কোন প্রকার যানবাহন চলাচল করেনি। দুরপাল্লার বাস, ট্রাক চলাচলও বন্ধ ছিল। কাপ্তাই হ্রদে নৌ পথে কোন লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
হরতাল চলাকালে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নাশকতা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। অন্যদিকে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। অফিস-আদালত খোলা থাকলেও মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। তবে হরতালে আওতামুক্ত ছিল এ্যাম্বুলেন্স, ঔষধ সরবরাহ গাড়ি, এবং সকল খাবারে দোকান।
এ কর্মসূচীর আওতায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পার্বত্য নাগররিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ও পার্বত্য গণশ্রমিক পরিষদ এ হরতাল পালন করছেন।