পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন দ্রুত সময়ের মধ্যে করা দরকার- ড. মিজানুর রহমান
স্টাফ রিপোর্টার:
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন দ্রুত সময়ের মধ্যে করা দরকার। তিনি বলেন, সত্য বলার ফলাফল সব সময় সুখকর হয় না। অনেক সময় সত্য বলা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়।
ড. মিজানুর রহমান রবিবার আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন ও বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক এর উদ্যোগে ছায়ানট ভবনের রমেশচন্দ্র হলে “প্রান্তিকীকরণ এবং বিচারহীনতা: পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী ও কন্যাশিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা” শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের কো-চেয়ার সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রেসিডেন্ট আয়েশা খানম, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং, আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের সদস্য ব্যরিস্টার সারা হোসেন, ও খুশী কবির।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম বলেন, ‘ভিশন ২০২১-এ আদিবাসী ইস্যুটিকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। আর আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা কেউ একা নই। এজন্য সংখ্যাগুরু ও আদিবাসীদের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে ঐক্য গড়তে হবে’।
কমিশনের সদস্য ব্যরিস্টার সারা হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে মামলাসমূহের ক্ষেত্রে মূলধারার নারী সংগঠনগুলোর সমর্থন থাকলেও পরে সেটি আর অব্যাহত থাকে না, ফলে মামলাগুলো হারিয়ে যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় সেটি হলো, ভূক্তভোগীরা দু’ভাবে নিপীড়নের শিকার হন। প্রথমত: ভূক্তভোগীর আত্মীয়-স্বজনরা হুমকির সম্মুখীন হন, দ্বিতীয়ত; আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নির্লিপ্ততা। এজন্য নারী নির্যাতন মামলাগুলোর জন্য অতিরিক্ত মনযোগ দেয়া দরকার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং বলেন, রাষ্ট্র আমাদের সবসময় সংখ্যালঘু বানিয়ে রাখতে চায়। আমরা কল্পনা চাকমার বিচার আজও পাইনি। এ অপহরণের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের সরকার এখনও চাকরিতে বহাল রেখেছে। বর্তমানে পার্বত্য ভ’মি কমিশন আইনে সংশোধনী না আনার জন্যও বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে শোনা যাচেছ। পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের সদস্যগণ যারা কিনা বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিত্ব করছেন তারাই যদি পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপদ না থাকেন সেক্ষেত্রে আমরা পাহাড়ীরা কী অবস্থায় বসবাস করছি সেটা সহজে অনুমেয়। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে সেনা সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের উপদেষ্টা ড. মেঘনা গুহঠাকুরতার সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতল থেকে আগত অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের মধ্যে এড. সুস্মিতা চাকমা, নারীনেত্রী শেফালিকা ত্রিপুরা, রীতা চাকমা, ভাগ্যলতা তঞ্চ্যঙ্গা, সুলেখা ম্রং প্রমুখ স্ব-স্ব মতামত তুলে ধরেন।