পুড়ে যাওয়া বসতিতে ফিরছে রোহিঙ্গারা

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে ৯ হাজার ৩শ বসতি পুড়ে ছাই হয়েছে। মারা গেছে ৩ শিশুসহ ১১জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা। পুড়ে যাওয়া বসতিতে ফিরতে শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। প্রকৃত ঘটনা তদন্তে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, এছাড়াও এনজিও ১৩৬টি লার্নিং সেন্টার পুড়ে গেছে, ৩৮শ পরিবার অন্য ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। ইতোমধ্যে রেড ক্রিসেন্টের মাধ্যমে ৮’শটি তাবু দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্থানীয় ও রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাথমিকভাবে ১০ লক্ষ টাকা ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক এ বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় যাদের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে তাদের তালিকা করে ঘর ও আনুমানিক ২/৩ মাসের খাদ্য দেওয়া হবে৷

দুর্যোগ ও ত্রাণ সচিব মো. মহসীন আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাম্পসহ পুরো ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল সংখ্যক অতিরিক্ত পুলিশ, আর্মড পুলিশ নিযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৮ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত শেষে বলা হবে।

সরেজমিন বালুখালী ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকাল হতে বিভিন্ন জায়গা থেকে পুড়ে ছাই হওয়া সেই জায়গায় ফিরে আসতে দেখা গেছে রোহিঙ্গাদের। দলেদলে পরিবারসহ পুরনো ঠিকানায় ফিরছে তারা। অনেকেই নতুন কাঠ, বাস নিয়ে ফিরছে। দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা আহত মানুষদের সেবা প্রদান করছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে

ক্ষতিগ্রস্ত ছৈয়দুল কাদের নামের এক রোহিঙ্গা জানান, আমাদের বাড়িঘর ও খাবারসহ সব পুড়ে গেছে। আমরা পরিবারসহ খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করেছি। সর্বস্ব হারিয়ে এখন পুড়ে যাওয়া স্থানেই ফিরেছি। মো. কাশেম নুর নামের আরেক রোহিঙ্গা জানান, বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ায় পরিবারসহ পাশ্ববর্তী ক্যাম্পে অবস্থান নিয়েছিলাম। এখন পরিবারসহ এখানে আসলাম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার সাথে সাথে প্রাণে বাঁচতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নিরাপদ স্থানে যায়। অনেকেই বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এছাড়াও কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয়ের খোঁজে পরিবার-পরিজনসহ স্থানীয় গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়ে। তাদের মধ্যে থেকে অনেকেই স্থান না পেয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করেছে বলে জানিয়েছেন পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন