পেকুয়ায় বিধবার বসতঘর ভাঙচুর-লুটপাট, আহত ২
পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় এক অসহায় বিধবার বসতঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে প্রভাবশালী দুর্বৃত্তরা। হামলায় বিধবাসহ ২জন আহত হয়েছে।
আহতরা হলেন, জাহানারা বেগম (৭০) ও তার নাতী খালেদ মাসুদ (১০)। তাদের পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামে। আহত বৃদ্ধা ওই গ্রামের মৃত নুরুচ্ছাফার বিধবা স্ত্রী বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিধবার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত নুরুচ্ছাফার বৃদ্ধা স্ত্রী বিধবা জাহানারা বেগমের টিনের বসতঘর ও কিছু জমি দীর্ঘদিন ধরে জবর দখলের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল একই গ্রামের মৃত খাইরুল বশরের পুত্র আবদু রহিম ও আবু ছিদ্দিক, জাফর আলমের পুত্র মিরাজ, গোলাম বারীর পুত্র ফারুক, মোস্তাক আহমদের পুত্র এনায়েত আলীসহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী লোক। এই সুবাধে ওই প্রভাবশালীরা মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিধবার বসতঘরে হামলা চালায়। তারা বসতঘরটি সম্পূর্ণ ভাঙচুর করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। এসময় তারা বিধবা ও তার এক নাতীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
পরে বিধবার বসতঘর থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এমনকি হামলকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। লুটপাটের প্রায় দুই ঘণ্টা পর স্থানীয়রা এগিয়ে এসে হামলাকারীদের ধাওয়া করে। এ ঘটনায় আহত বিধবার পরিবারের পক্ষ থেকে পেকুয়া থানায় মামলা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রভাবশালীরা বিধবার পরিবারকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছিল। প্রভাবশালীরা উল্টো বিধবার বসতভিটা ও জমির উপর ১৪৪ ধারায় একটি মামলাও দায়ের করেছিল আদালতে। পরে আদালত উভয় পক্ষকে স্থিতিব্যস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। কিন্তু এখন প্রভাবশালীরাই আইন অমান্য করে নিজেরাই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিধবার বসতঘরে অনধিকার প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে আদালত অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার বিকালে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত বৃদ্ধা জাহানারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, তারা (প্রভাবশালীরা) আমার মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই বসতঘরটি গুড়িয়ে দিয়েছে। আমি এখন কোথায় যাবো জানিয়ে অঝর নয়নে কান্নাকাটি করছিল বিধবা জাহানারা বেগম।’ তিনি প্রশাসনের কাছে প্রভাবশালীদের বিচার দাবি করেছেন।
পেকুয়া থানার ওসি মো. আবদুর রকিব জানান, এ ঘটনায় এখনো বিধবার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।