বাঙ্গালীরা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে ইতহাস সৃষ্টি করেছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, মাটিরাঙ্গা:
পৃথিবীতে ভাষার জন্য বাঙ্গালীরা জীবন দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এ অনুভূতি আমাদের সকলের মধ্যে তৈরি করতে হবে। এ আয়োজন সফল করার মধ্য দিয়েই শহীদ দিবসের চেতনাকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ‘ভাষা-সংস্কৃতি ও বই মেলা’ মেলা বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতিকে একীভূত করবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে সুদৃঢ় করবে। স্ব-স্ব ভাষা-সংস্কৃতির উন্মেষ ঘটাবে।
রোববার বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ভাষাভাষিদের ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘ভাষা-সংস্কৃতি বই মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান‘র সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিআরডিবি’র উপপরিচালক মো. আবদুল মালেক, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক, মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সাহাদাত হোসেন টিটো, মাটিরাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মনছুর আলী ও মাটিরাঙ্গা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন খোন্দকার বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণলাল দেবনাথ স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
মাটিরাঙ্গার গণপাঠাগার চালুকরণসহ প্রতিটি ইউনিয়নে গণপাঠাগার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক বলেন, ভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসকে একদিনে সীমাবদ্ধ না রেখে দিবসগুলোর তাৎপর্য বর্তমান প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের দৃঢ়চেতা উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি।
মাটিরাঙ্গায় গণপাঠাগার চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান গণপাঠাগারকে শিক্ষক-ছাত্রদের সুতিকাগারে পরিনত করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। মাটিরাঙ্গা গণপাঠাগার স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের বৈকালিক ও সান্ধ্যকালীন আড্ডায় মুখর হয়ে উঠবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিসেস হাসিনা বেগমসহ প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
‘ভাষা ও সংস্কৃতি মেলা’য় বাঙ্গালী, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন ভাষাভাষিদের নিজস্ব ভাষা নিয়ে পৃথক পৃথক স্টল সাজানো হয়েছে। এছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ, কৃষি বিভাগ ও এনজিও তাদের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে স্টল সাজিয়েছে মেলা মাঠে। এ ছাড়াও স্থানীয় বই বিক্রেতারাও মেলার স্টলে নিয়ে এসেছে এবারের একুশে বই মেলায় প্রকাশিত নতুন নতুন বই।
এছাড়াও মেলা মাঠে প্রতিদিনই বিকাল থেকে বিভিন্ন ভাষাভাষিদের সংস্কৃতি তুলে ধরার মধ্য দিয়ে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এমনটা জানিয়েছেন মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমান। মেলা চলবে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।