বান্দরবানে আমের বাম্পার ফলন: ক্রেতা নেই

fec-image

গত বছর চেয়ে এ বছরে বান্দরবানে স্থানীয় রাং গোওয়ে আমের বাম্পার ফলন হলেও ব্যাপারী বা ক্রেতা নেই। এক বছরে কষ্টের ফসল করোনায় ভেস্তে গেল সব পরিশ্রম, অর্থের ক্ষতির সম্মুখে আম চাষীরা।

বান্দরবান শহর ফারুক পাড়া, লাইমি পাড়া, শৈল প্রপাত, গেশৎমনি পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চার পাশে চোখ জুড়ানো আমের বাগান। গাছে গাছে থোকা থোকা আমে ভরা। সময় পেরিয়ে যাওয়ায় অনেক আম নষ্ট হয়ে গেছে।

প্রতি বছর এমন সময়ে শহর থেকে আম ব্যাপারীদের আনাগোনা থাকলেও এবারে ব্যাপারীদের দেখা নেই।

শৈল প্রপাতের আম চাষি লালু বম বলেন, প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক টন আম এই এলাকায় বেচাকেনা হয়। প্রথম দিকে আচারের জন্য কিছু কাঁচা আম বিক্রি করেছি, প্রতি মণ ৬শ টাকা করে। দাম মুলানোর কোন ক্রেতা নেই। করোনায় সব লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে। আম বাগান পরিচর্যা করতে যে খরচ হয়েছে সেই খরচও আসবে না।

ফারুক পাড়া আরেক আম চাষি টনদির বম জানায়, গত বছরে প্রতি মণ ১হাজার থেকে ১৫০০ টাকা করে রাঙ গুওয়ে আম বিক্রি করেছি। এবারে কোন ক্রেতা নেই, দড়ও নেই। বাগানে গেলে কষ্ট লাগে, আমগুলো গাছ থেকে ঝড়ে পরে যাচ্ছে।

আম ব্যাপারী খোরশেদ জানিয়েছেন, প্রতি বছর এখান থেকে আম নিয়ে শহরে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে থাকি। গণপরিবহন খুলে দেয়ায় কিছু আম কিনেছি। শহরেরও বিক্রি কম। এবারে প্রতি মণ ৬শ টাকা করে নিয়েছি।  স্থানীয় আম ব্যবসায়ী সিরাজ জানিয়েছেন, এবারে আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ে ঝরে পরা দিনাজপুরে আম কম দামে শহরে ছেয়ে গেছে।

আরো জানিয়েছেন, বালাঘাটা চড়–ই পাড়া, উজিমুখ পাড়া থেকে স্থানীয় চাষীদের কাছ থেকে পাহাড়ি রাং গোওয়ে আম ৪শ টাকা করে প্রতি মণ কিনেছি। লকডাউনের কারণে মজুরি ও গাড়ীভাড়া বেড়ে যাওয়ায় তেমন সুবিধা করতে পারছি না।

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক ড. একেএম নাজমুল হক বলেন, গত বছর বান্দরবান জেলায় ৭হাজার ৩৪০ হেক্টর এবং এবছর ৭হাজার ৫শ হেক্টর এলাকাতে আম চাষ হয়েছে। আমাদের ধারণা ১লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে। বেশ কিছু কাঁচা আম আচারের জন্য বিক্রিও হয়েছে। গত ৩১ তারিখে গণপরিবহন কিছুটা শিথিল করার পর ব্যাপারীরা আসতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি যতটুকু ক্ষতি হওয়ার কথা ততটুকু ক্ষতি হবে না।

তিনি আরও বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য মাঝখানে দালাল এবং কয়েক জনের হাত বদলের কারণে নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হওয়ায়, কৃষি মন্ত্রণালয় ফুড ফর ন্যাশন একটা এ্যাপস তৈরি উদ্যেগ গ্রহণ করেছে। এতে কৃষক ও ক্রেতাদের ক্ষেত্রে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে আমসহ বিভিন্ন উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে সহজ হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন