“৫/৬টি এস্কেবেটর দিয়ে গত এক বছরে বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় প্রায় ছোট বড় ৩০টি পাহাড় কেটে ধ্বংস করে ফেলেছে”
পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট সক্রিয়

বান্দরবানে রাত নামলেই এস্কেবেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়

fec-image

টাকা দিলে বাঘের চোখ পাওয়া যায়। টাকা দিয়ে প্রশাসনসহ সকল সেক্টরকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি পরিবেশ আইনে মামলা হয়েছে। মামলা মামলার মত চলতে থাকবে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব

দিনে প্রশাসনের বাঁধা তাই রাতের অপেক্ষা। রাত নামলেই এস্কেবেটর দিয়ে কাটা শুরু,চলে রাত ভর। এভাবে প্রতিযোগিতা দিয়ে পাহাড় কাটছে বান্দরবান সদরের ৭/৮ জনের পাহাড় খেকো একটি সিন্ডিকেট।

এভাবে ৫/৬টি এস্কেবেটর দিয়ে গত এক বছরে বান্দরবান সদর ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় প্রায় ছোট বড় ৩০টি পাহাড় কেটে ধ্বংস করে ফেলেছে।

এসব পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে। এর পরেও তারা দমার পাত্র নয়।

সরেজমিনে পরিদর্শন করে জানা গেছে, বান্দরবান সদরের বালাঘাটা এলাকার ফার্নিসার ব্যবসায়ী আব্দুল মোমেন, আব্দুর রহিম ও মো. হোসেন। অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে মাটি ব্যবসায় অধিক লাভ হওয়ায় তারা ফার্নিসার ব্যবসা ছেড়ে মাটি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। ক্যাচিংঘাটা নতুন পাড়ার বাসিন্দা ইয়াসিন পেশায় ছিলেন গাড়ি চালক। তিনি তার এ পেশা ছেড়ে জড়িয়ে পড়েছেন পাহাড় কাটা এবং মাটি ব্যবসায়।

বনরুপার মো. হেলাল উদ্দীন ও দোহাজারী বিওসি মোড় এলাকার মো. জুয়েল। তারাও কোম্পানীর চাকরী ছেড়ে জড়িয়ে পড়েছেন পাহাড় কাটা ও মাটি ব্যবসায়। এই সিন্ডিকেটের রয়েছে আরো অনেক অনুসারী।

গেল ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সরকারী বন্ধ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই পাহাড় খেকো চক্রটি ৩/৪টি এস্কেবেটর দিয়ে দিনে ও রাতে সমান তালে বান্দরবান সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৬/৭টি পাহাড় কেটে পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতি করেছে। বালাঘাটা,ক্যাচিংঘাটা,কালাঘাটা,মেঘলা বনরুপা এলাকার লোকজন জানান,আব্দুল মোমেন,আব্দুর রহিম,মো.হোসেন, ইয়াছিন, মো. হেলাল উদ্দীন ও জুয়েলসহ আরো অনেকে বিভিন্ন এলাকায় দিনে ও রাতে এস্কেবেটর দিয়ে অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে ১০/১২ টা ড্রাম ট্রাক যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে।

রাস্তায় মাটির ট্রাক চলাচলের কারনে ধুলোবালিতে পরিবেশের মারাত্নক ক্ষতি হচ্ছে।

রবিবার(৩০ এপ্রিল) রাত ১১ টার দিকে বান্দরবান সদরের বালাঘাটা ব্রিগেড গেইট সংলগ্ন এজাহার কলোনী এলাকায় আব্দুল মোমেন ও মো.হেলাল উদ্দীন ২টি এস্কেবেটর দিয়ে কেটে পাহাড়ের বিশাল একটি অংশ কেটে নিয়ে মাটি সরবরাহ করছে।

এ ব্যপারে আব্দুল মোমেন ও ইয়াছিন অবৈধ ভাবে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করার ঘটনা স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে বলেন, টাকা দিলে বাঘের চোখ পাওয়া যায়। টাকা দিয়ে প্রশাসনসহ সকল সেক্টরকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি পরিবেশ আইনে মামলা হয়েছে। মামলা মামলার মত চলতে থাকবে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব বলে তারা জানান।

এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান কার্যালয়ের সহকারী পরিচাল ফখরুদ্দীন জানান, এই সিন্ডিকেটের কারনে আমি অতিষ্ট। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও তাদের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ আসে। ইতিমধ্যে এই সিন্ডিকেটের কয়েক জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের দ্বারা সকল ক্ষতি নিরুপন করে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন