বান্দরবানে সেনা অভিযানে কেএনএফ নিয়ন্ত্রিত সাড়ে ১৮ কিলোমিটার রাস্তা মুক্ত

fec-image

বান্দরবানের স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

সোমবার (১ মে) ভোর থেকে থানচি-লিক্রী সড়কে রুমা উপজেলার বাকলাই এর আশপাশের এলাকায় এই অভিযান চালায় বান্দরবান রিজিয়নের সেনা সদস্যরা। সর্বশেষ তথ্যমতে, সেনা অভিযানে টিকতে না পেরে কেএনএফ সদস্যরা পিছু হটলে বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সন্ত্রাস মুক্ত করেছে সেনাবাহিনী।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জঙ্গীদের সাথে নেটওয়ার্ক ভেঙে যাওয়ার পর অর্থের সংস্থানে গত দুই মাস ধরে রুমা-বগালেক সড়কে এবং থানচি-লিক্রী সড়কে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ কর্তৃক সড়ক নির্মাণ প্রকল্প থেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, ঠিকাদার ও শ্রমিকসহ প্রায় ১০/১২ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কেএনএফ সদস্যরা। পরে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্তি পায় অপহৃতরা। এছাড়াও কেএনএফ সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছে সেনা কর্মকর্তাসহ ৫ জন। কেএনএফ এর সন্ত্রাসী তৎপরতায় বন্ধ হয়ে যায় রুমা-বগালেক এবং থানচি- লিক্রী সড়ক নির্মাণ কাজ। বেশ কিছু দিন সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার পর শেষ এই দুটি সড়কে সন্ত্রাসমুক্ত করতে অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর একাধিক দল। অভিযান চলাকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কেএনএফ সদস্যরা সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি ছুঁড়ে জবাব দিলে শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল বন্দুকযুদ্ধ। বিকাল পর্যন্ত গোলাগুলির ঘটনা অব্যাহত ছিল বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

সেনাবাহিনীর গুলির মুখে টিকতে না পেরে পিছু হটতে বাধ্য হয় কেএনএফ সদস্যরা। সেনাবাহিনী এখনো পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। তল্লাশির পর হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে কেএনএফ সদস্যরা পালিয়ে যাওয়ায় থানচি-লিক্রী সড়কের সাড়ে ১৮ কিলিমিটার রাস্তা সন্ত্রাসমুক্ত করা হয়েছে। এই দুটি সড়ক সন্ত্রাসমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সেনাবাহিনী জানায়।

সেনা অভিযানের এই সাফল্যে উক্ত এলাকায় নির্মাণাধীন সীমান্ত সড়কের কাজ পুনরায় শুরু করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও অত্র এলাকায় বন্ধ হয়ে যাওয়া পর্যটন কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করা যাবে। এতে পর্যটন নির্ভর স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থান পুনরায় শুরু হবে বলে স্থানীয়দের অভিমত।

তবে স্থানীয়দের মতে, সেনাবাহিনীর অভিযানের পর পলায়নপর কেএনএফ সদস্যদের উপর প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক হামলা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে পুনরায় বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। তবে এতে হতাহতের খবর এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, গত এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে কেএনএফ ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কেএনএফ, বান্দরবান, সেনাবাহিনী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন