ভারতের প্রথম যুদ্ধবিমান চালক মুসলিম নারী সানিয়া মির্জা

fec-image

ভারতের প্রথম মুসলিম নারী যুদ্ধবিমান চালক হতে যাচ্ছেন দেশটির উত্তর প্রদেশের মেয়ে সানিয়া মির্জা। ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমির ২০২২ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এ গৌরব যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন সানিয়া। ২৭ ডিসেম্বর তিনি পুনেতে এনডিএ একাডেমিতে যোগ দেবেন।

ভারতের অন্যতম তারকা টেনিস খেলোয়াড় সানিয়া মির্জার নামে তার নাম। হিন্দি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করেই এই সাফল্য অর্জন করেছে সানিয়া। সানিয়া মির্জার এই সাফল্যে শুধু তার বাবা-মা নন, গ্রামবাসীরাও গর্বিত।

সানিয়ার বাবা শহিদ আলি একজন টিভি মেকানিক। তিনি বলেন, সানিয়া দেশের প্রথম নারী ফাইটার পাইলট অবনী চতুর্বেদীকে রোল মডেল মনে করেন। শুরু থেকেই তিনি তার মতো হতে চেয়েছিলেন। সানিয়া দেশের দ্বিতীয় কন্যা, যাকে ফাইটার পাইলটের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমির ২০২২ সালের পরীক্ষায় নারীদের জন্য মাত্র দুটি আসন সংরক্ষিত ছিল। প্রথম চেষ্টাতে আসন না পেলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় একটি আসন পেয়ে যায় সানিয়া। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সানিয়াই হবেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) প্রথম মুসলমান নারী যুদ্ধবিমান চালক।

এনডিএ-র চলতি বছরের পরীক্ষায় পুরুষ ও নারী মিলিয়ে মোট ৪০০টি আসন ছিল। যেখানে নারীদের জন্য ১৯টি আসন ছিল এবং ফাইটার পাইলটদের জন্য ছিল মাত্র দুটি আসন। সানিয়া নিজের যোগ্যতায় এর একটিতে জায়গা করে নিয়েছেন। পরীক্ষায় সামগ্রিক ভাবে ১৪৯তম স্থান পেয়েছেন তিনি।

দেহাত কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত যশোভার নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা সানিয়া। স্থানীয় পণ্ডিত চিন্তামণি দুবে ইন্টার কলেজ থেকে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেন। এর পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি মির্জাপুর শহরের গুরু নানক গার্লস ইন্টার কলেজে ভর্তি হন।

উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় জেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন সানিয়া। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সানিয়া এনডিএ পরীক্ষায় বসেছিলেন এবং ১৪৯তম র‌্যাঙ্ক করেন।

সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘নারী যুদ্ধবিমান চালকদের জন্য মাত্র দুটি আসন সংরক্ষিত ছিল। প্রথম বারের চেষ্টায় আমি আসন দখল করতে ব্যর্থ হই। তবে, দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় আমি সেই যোগ্যতা অর্জন করেছি।’

সানিয়া বলেন, ‘ইংরাজিতে ভাল কথা বললেই যে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে বেশি কদর পাওয়া যায়, এই ধারণা ভ্রান্ত। হিন্দি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা যদি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয় তবে তারাও যে কোনো কিছু অর্জন করতে পারে।’

সানিয়া জানিয়েছেন, যুদ্ধবিমানের চালক হওয়ার জন্য তাঁর অনুপ্রেরণা ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অবনী চতুর্বেদী। তাকে দেখেই তার যুদ্ধবিমান চালক হওয়ার স্বপ্ন জাগে।

সানিয়া বলেন, ‘ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অবনী চতুর্বেদী আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছেন এবং তাঁকে দেখে আমি এনডিএতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আশা করি আমি এক দিন তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারব।’

দুই সঙ্গী মোহনা সিংহ এবং ভাবনা কান্থের পাশাপাশি অবনী চতুর্বেদীকে ভারতের প্রথম নারী যুদ্ধবিমান চালক হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নারী, ভারত, মুসলিম
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন