পরিবারের সাথে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শহীদ হাবিবুর রহমানের শেষ কথা

‘ভুল করলে ক্ষমা করে দিও। একটা অভিযানে যাচ্ছি’

fec-image

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময়ের ঘটনায় নিহত সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পটুয়াখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের গাজি বাড়িতে তার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে চলছে শোকের মাতম।

নির্বাক হয়ে আছেন তার বাবা, মায়ের চিৎকারে ভারি হয়ে আসছে আকাশ। হাবিবুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার লতিপুর গ্রামে। তিনি আব্দুল মজিদ সরদারের দ্বিতীয় সন্তান।

পটুয়াখালী শহরের বহালগাছিয়ায় গড়ে তুলেছেন নিজের বাড়ি ‘সেনা নিকেতন’ পরিবার পরিজনের সঙ্গে কাটাবেন অবসরকালীন সময়। এবছরই তার অবসর নেয়ার কথা ছিলো।

পরিবার জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানাজা শেষে নিজের হাতে গড়া বাড়ি পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গাজি বাড়ির আঙ্গিনায় দাফন করা হবে তাকে।

হাবিবুর রহমানের বড় ছেলে হাসিবুর রহমান বিশ্বাস করতে পারছেন না, তার বাবা আর নেই। অভিযানে যাওয়ার আগে বড় ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন হাবিবুর রহমান। বলেন, ‘ভুল করলে ক্ষমা করে দিও। একটা অভিযানে যাচ্ছি।’ শোকে পাথর হলেও দেশের জন্য বাবা প্রাণ উৎসর্গ করায় গর্ববোধ করছেন তিনি।

স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান, হাবিবুর রহমান ছিলেন নম্র ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের। নিজের করা নতুন বাড়ির আশপাশে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন তিনি।

নিহত হাবিবুর রহমানের বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। ছেলেদের মধ্যে বড় ছেলে হাসিবুর রহমান (২২) সদ্য ডিপ্লোমা শেষ করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির অপেক্ষায় আছেন। আর ছোট ছেলে হাবিব বিন হাসান (২০) সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে কর্মরত।

উল্লেখ্য, বান্দরবানের রুমার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর সাথে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূলদলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলির সময় মাথায় গুলি লেগে নিহত হন সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান। পায়ে গুলি লেগে আহত হন এক সৈনিক। এসময় তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসীও নিহত হয়। উদ্ধার হয় বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন