রাখাইনে মুসলমান নিধনে অংশ না নেয়ায় খুন করা হয় বহু হিন্দুকে

ডেস্ক নিউজঃ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে আসা কয়েকজন হিন্দু নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে নিউ এজ নামে বাংলাদেশি একটি গণমাধ্যম। তাতে উঠে এসেছে রাখাইনের হিন্দুদের ওপর নেমে আসা নির্মম অত্যাচারের কারণ।

রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় মাউংডাউ জেলার খা মাউং শেইক নামে একটি গ্রামের স্বামী বা বাবা হারিয়েছেন এমন কমপক্ষে আটজন হিন্দু নারীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হত্যা করেছে। এ হত্যার কারণ জানিয়েছেন সে নারীরা। তারা বলছেন, সেখানকার রোহিঙ্গাদের হত্যা করতে হিন্দুদের অংশগ্রহণ চেয়েছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু হিন্দুরা রোহিঙ্গা হত্যায় রাজি না হওয়ায় তাদেরকেই হত্যা করে মিয়ানমারের সেনারা।

যে হিন্দু নারীরা এ বিষয়টি জানিয়েছেন, তারা হলেন, রিকা বালা (২৭), গঙ্গা বালা (২০), মিনো বালা (২২), জোসনা বালা (২৫), আনিকা বালা (১৫), সসিল বালা (২০) ও স্বরস্বতী রাজকুমারী (১৮)। তারা সবাই সেই একই গ্রামের বাসিন্দা।

তারা সবাই বর্তমানে কক্সবাজারের কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী রিকা বালা বলেন, ‘আমাদের ওখানে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।

কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধরা আমাদের স্বামী ও বাবাদের হত্যা করেছে কারণ আমরা রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যাযজ্ঞে অংশ নেইনি। ’
আনিকা বালা নামে ১৫ বছর বয়সী এক বিধবা বলেন, ‘আমি ছয় মাসের গর্ভবতী। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে মুসলমানদের হত্যায় অংশগ্রহণ না করায়। আমি সব কিছু হারিয়েছি। আমার বাবা এবং মা আগেই মারা গিয়েছেন। ’

তিনি বলেন, তারা মিয়ানমারের বাহিনীর তাণ্ডবের সময় মুসলমানদের সঙ্গে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এ সময় শুধু পরার কাপড় ছাড়া অন্য কিছুই আনতে পারেননি তারা।

অন্য একজন নারীও একই কথা বলেন। তার নাম স্বরস্বতী রাজকুমারী। স্বরস্বতীর ভাষ্য, ‘বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও মিয়ানমারের সেনারা তাদের রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যার কাজে অংশ নিতে বলে। কিন্তু আমার বাবা সেই কাজে অংশ নিতে চাননি। এরপর বৌদ্ধরা ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আমার বাবাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে খুন করে। আমার মা এ সময় বাবাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তারা মাকেও হত্যা করে। ’

বর্তমানে তাদের আশ্রয় হয়েছে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে। রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ নূর বলেন, তারা বর্তমানে মুসলমানদের সঙ্গেই থাকছেন।

সূত্র : নিউ এজ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন