রোহিঙ্গাদের দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উখিয়ায় আসছেন


টেকনাফ প্রতিনিধি:

মিয়ানমারের সেনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে মঙ্গলবার কক্সবাজারের উখিয়ায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সকালে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এটি তার অষ্টম বারের মতো কক্সবাজার সফর। তবে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এটাই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হেলিকপ্টারযোগে উখিয়ায় পৌঁছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সার্কিট হাউজে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতি শেষে ৩টা ৫০ মিনিটে কক্সবাজার ত্যাগ করার কথা রয়েছে তার।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একে এম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি সদস্যরাও নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন। একই সঙ্গে সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তৎপর রয়েছে।’ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সফল করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালায় দেশটির একটি বিদ্রেুাহী গ্রুপ। এ ঘটনায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা, ধর্ষণ, তাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়াসহ নানা নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নির্মম নির্যাতন, স্বজনের মৃতদেহ রেখে টানা না খেয়ে প্রাণ নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এ দেশে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গরা।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা জানান, তাদের দেখতে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার তারা মাথা গোঁজার একটু ঠাঁই পাবেন, নিয়মিত খাবার পানি, দু’বেলা পেট ভরে ভাত খাওয়াসহ বেঁচে থাকার একটা ব্যবস্থা হবে। তাই শত কষ্টেও প্রধানমন্ত্রীর আগমনে খুশি রোহিঙ্গারা। খুবই কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাতে পারবেন।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত তিন সপ্তায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন। তবে স্থানীয় লোকজনের দাবি, এ সংখ্যা আরও বেশি।

উল্লেখ্য, টেকনাফ ও উখিয়ায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। উখিয়ার কুতুপালংয়ে বনবিভাগের দুই শত একর জমিতে তিন শত শেড বানানোর কাজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার বিকালে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ ও নিবন্ধন করার কাজ শুরু হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন