রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২০
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২০ জন।
৬ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাত ৮টার দিকে লম্বাশিয়ার চারমুয়া (চৌমুহনী) তাবলীগ জামায়াতে মারকাজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিদিন একের পর এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভ্যন্তরে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আতংকে রয়েছে সাধারণ রোহিঙ্গারা। এ ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আর্মড ব্যাটালিয়ান মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে মুন্নার ভাই মোহাম্মদ ও গিয়াস উদ্দিনের পরিচয় পাওয়া গেলেও আরেক জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরসি) অফিস সূত্র ৪ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মো. সামছু দ্দৌজা বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র কুতুপালং ক্যাম্পে নতুন ও পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা চলছে। তারই ধারাবাহিকতা গত ৪ ও ৫ অক্টোবর ৩ জন রোহিঙ্গা হত্যা করা হয়েছে। আর মঙ্গলবার সকালে র্যাব অভিযান চালিয়ে ৯ জন রোহিঙ্গা ডাকাতকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ”মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুতুপালং ক্যাম্প ১ এ রোহিঙ্গাদের দু’গ্রুপ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে এখনো সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। তবে এ ঘটনায় কত জন হতাহত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএন সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজনের গলাকাটা ও অপর ৩ জন গুলিবিদ্ধ। এ ঘটনায় একজন আনসার সদস্য আহত রয়েছে। সংঘর্ষ এখনো চলমান রয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, মঙ্গলবার রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত খবর পাওয়া গেলেও এখনো তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত উখিয়া থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ একজন এজাহার নামীয় সন্ত্রাসীকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তির নাম কুতুপালং রেজি: ক্যাম্পের ডি ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহীমের ছেলে জিয়াউর রহমান (২০)।
অপরদিকে র্যাব পৃথক অভিযান চালিয়ে ৯ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করে। আটককৃতরা হলো রশিদ আহমদ (৩২), ছলিমুল্লাহ (৫৫), শফিক আলম (২০), আব্দুল হামিদ (২০), মো: সাবের (৩২), মো. ছালাম (৫০), ইসমাইল (২৫) হারুনুর রশিদ (২৮) ও ফয়েজ (২২) ।
এ সময় ৪টি দেশে তৈরি অস্ত্র, বিশ রাউন্ড কার্তুজ, ধারালো কিরিচ, লোহার রড ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৫দিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে টানা হামলা-পাল্টা হামলা ঘটনায় ৭ জন খুন হয়। নিহতরা হলো, ইমাম শরীফ, শামসুল আলম, মো. ইয়াছিন ও সমিরা আকতার।