শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ধুমছাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

Coxs School (2)

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার : 

কক্সবাজারের দুর্গম পাহাড়ি জনপদ ঈদগড়। এখানে গড়ে উঠেছে ‘ধুমছাকাটা সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয়’। বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও উন্নয়নসহ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে গৃহিত পদক্ষেপ ও তথ্য প্রযুক্তিতে একেবারেই পিছিয়ে রয়েছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ৪০ শতক জমির উপর দৃষ্টি নন্দন গাছপালা সমৃদ্ধ এই বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সনে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৩ সালে স্যাটেলাইট থেকে জাতীয়করণ হয়। এটি কক্সবাজারের রামুর ঈদগড় ইউনিয়নে স্থাপিত হয়। ৪ জন দাতা সদস্য যথাক্রমে – সাবেক মেম্বার ছৈয়দ আলম, ফরিদুল আলম, মৃত মোস্তফিজুর রহমান ও মৃত নুরুল আলমের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ বিদ্যালয়টি গড়ে উঠে।

সরেজমিনে পরির্দশনে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিপু রানী ধর জানালেন নানা সমস্যা ও উন্নয়ন হলে সম্ভাবনার কথা। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা হলো ভবনের সংকীর্ণতা। এখানে আধুনিক দ্বিতল বা তিন তলা বিশিষ্ট একটি ভবন হলে এই সমস্যার সমাধান হবে। তাছাড়া বাউণ্ডারি নির্মাণ, মাঠ ভরাট ও শিক্ষক সংকট রয়েছে।

তিনি আরো জানান, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২৪৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। বলতে গেলে তিনিই একমাত্র শিক্ষক। এখানে সহকারি শিক্ষক, ক্রীড়া শিক্ষক, কম্পিউটার শিক্ষক, পিয়ন, অফিস সহকারি, দারোয়ান ও হিসাব রক্ষক সব পদই শুন্য। সব কিছু তাকেই করতে হয়, সামাল দিতে হয়। এত প্রতিকূল পরিস্থিতি ও সমস্যার পাহাড়েও আশাবাদি তিনি। সব কিছু একদিন সমাধান হবে, এ আশায় তিনি বুক বেধে আছেন।

তার কথা মতে, তার সাথে ২০১১ সাল থেকে দু’জন প্যারা শিক্ষক রয়েছেন। তারা হলেন, রেহেনা পারভিন এবং মোহাম্মদ ইউছুফ। দু’জন থাকাতে তিনি বিদ্যালয়টি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন শিক্ষাদানে কিছুটা উৎসাহ পাচ্ছেন।

প্রধান শিক্ষক নিপু রানী ধর ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, গ্রামীণ জনপদ হলেও এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কম নয়। এলাকার শিক্ষা বিস্তারে বিদ্যালয়টি ভুমিকা রাখছে। প্রতিবারই সমাপনী পরীক্ষায় সফলতা আসছে। এবারো এ বিদ্যালয় থেকে সমাপনি পরীক্ষায় ১৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তাঁর আশা এবারো তাদের শতভাগ সফলতা আসবে।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলী আহমদ জানান, শেষ বয়সে তিনি এ বিদ্যালয়টির উন্নয়ন চান। এ লক্ষে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

দাতা সদস্য সাবেক ইউপি মেম্বার ছৈয়দ আলম কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বললেন, তাঁর কলিজা শান্তি পাবে যদি বিদ্যালয়টিতে ভবনসহ নানা উন্নয়ন হয়। প্রয়োজনে তিনি এলাকার শিক্ষা বিস্তারে আরো জমি দান করবেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও শিক্ষানুরাগী এমদাদুল হক জানালেন, দুর্গম এবং পাহাড়ি জনপদ হলেও বিদ্যালয়টি এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালাতে চায়। তবে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সব কিছুই দরকার। তারাও চাইলেন উন্নয়ন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন