সেনাবাহিনী -বিজিবি যদি দ্রুত চিকিৎসা না দিত তাহলে সাজেকের গ্রামগুলো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতো- ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন
স্টাফ রিপোর্টার:
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির দূর্গম সাজেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় সেনাবাহিনী -বিজিবি যদি দ্রুত চিকিৎসা না দিত তাহলে ১৩ হাজার ত্রিপুরা অধ্যুষিত সাজেকের গ্রামগুলো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতো। সাজেকে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সেনবাহিনী, বিজিবি, স্বাস্থ্য বিভাগ দ্রুত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ায় অসংখ্য প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। তবে সাজেকের ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় এনজিও সংস্থাসহ ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ কোন রকম সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেনি ।
সাজেকে দুর্গত মানুষের পাশে সাহায্য নিয়ে দাঁড়াতে সরকারসহ বিত্তবান মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছে, রাঙ্গামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন। সাজেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় সেনাবাহিনী -বিজিবি দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে মানুষের প্রাণরক্ষা করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সংগঠনটি। সাজেকের যে সব অঞ্চল এখনো যোগায়োগ ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছে সেখানে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা নির্মাণসহ খাবার পানির ব্যবস্থা করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দাবীও জানান ত্রিপুরা নেতৃবৃন্দ।
রবিবার বিকালে শহরের গর্জনতলীতে রাঙ্গামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা জানান সংগঠনটির নেতারা। সাজেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকা ঘুরে এসে সেখানকার পরিস্থিতি গণমাধ্যমকে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন নেতা ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাঙামাটি জেলার প্রত্যান্ত ও দুর্গম উপজেলা বাঘাইছড়ি তারই একটি অংশ সাজেক। যেখানে যাতায়ত ব্যবস্থা নাজুক। আর এ অঞ্চলে বসবাস করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র সম্প্রদায় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী। প্রত্যান্ত এ অঞ্চলে সম্প্রতি ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬জন ত্রিপুরা নারী-পুরুষের। বর্তমানে আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে প্রায় ২০০জন গ্রামবাসী।
চিকিৎসা সেবায় কাজ করছে স্থানীয় সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ৫টি মেডিকেল টিম। সহায়তায় এগিয়ে এসেছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ, সেনবাহিনী, বিজিবি, স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা প্রশাসন, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনসহ বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ।
তবে এখনো পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি কোন এনজিও সংস্থাসহ ইউএনডিপি-সিএইচটিডিএফ। বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় বর্তমানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত জনগণের দুর্ভোগ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। কিন্তু এ মহামারীর ফলে জনগণের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় লাগবে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আরও বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। তাই সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে ডায়রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশন সভাপতি সুরেশ ত্রিপুরা, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কুনজমি ত্রিপুরা, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ঝিনুক ত্রিপুরা,যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অশোক ত্রিপুরা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, তীব্র গরম ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে গত বুধবার বিকাল থেকে বৃহষ্পতিবার সকাল পর্যন্ত বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের ৩টি গ্রামে ডায়রিয়ায় ৬ জনের মৃত্যু হয়।