আজ শেষ ওয়ানডে

হোয়াইটওয়াশ রুখতে মরিয়া বাংলাদেশ

fec-image

অনুশীলন শুরুতে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সাকিব আল হাসান রোববার সকাল থেকেই ঘাম ঝরাচ্ছিলেন নেটে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মাঠে আসেন তামিম। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পর আলোচনা সারলেন দুই নির্বাচকের সঙ্গেও। এরপর সরাসরি চলে গেলেন সাগরিকার সেন্টার উইকেটে। সেখানে গিয়েই ডাক দিলেন, ‘সাকিব, এই সাকিব।’ সাকিব জানতে চাইলেন, আমি? তামিম মাথা নাড়াতেই তিনি চলে গেলেন উইকেটে। এ

রপর দুজন উইকেট নিয়ে আলোচনা করলেন। ইংল্যান্ড সিরিজের মধ্যে এটাই হয়তো অন্যতম সুন্দর দৃশ্য। প্রথম দুই ওয়ানডে হারার পর বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে অস্বস্তির আবহ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ শেষ ওয়ানডে জিতে সেই অস্বস্তি কাটাতে সাকিব-তামিমের মতো মরিয়া পুরো বাংলাদেশই।

ঘরের মাটিতে দীর্ঘদিন ওয়ানডে সিরিজ না হারার রেকর্ড নিয়ে এতদিন ছিল গর্বের আলোচনা। সাত বছর পর সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ এক ম্যাচ বাকি থাকতেই। আরেকটি শঙ্কা সামনে। সেটা হোয়াইটওয়াশের। সবশেষ ২০১৪ সালে ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল শ্রীলংকার বিপক্ষে। আবার সেই শঙ্কা উঁকি দিচ্ছে। ভেন্যু বদলেছে। এখন ফলও বদলে হোয়াটওয়াশ এড়াতে চায় স্বাগতিকরা। ম্যাচটি শুরু হবে বেলা ১২টায়।

একসময় সাগরিকাকে বাংলাদেশের ‘লাকি’ ভেন্যু মনে করা হতো। তখন একটি, দুটি জয়ই ছিল বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি। চট্টগ্রাম থেকে সরে সৌভাগ্যের ভেন্যু এখন মিরপুর। সেখানেই বাংলাদেশ হতাশ করেছে। তাই পুরোনো ‘লাকি’ ভেন্যুতেই আশা দেখা ছাড়া উপায় কই। ওয়ানডের শেষ লড়াইয়ে নামার আগেরদিন নির্ভার থাকতে চেয়েছিল স্বাগতিকরা। আগেরদিন ঢাকা থেকে আসার পর অনুশীলন করেনি দল। সাকিব ব্যবসায়িক কাজ শেষ করে দলের সঙ্গে না গিয়ে পরে চট্টগ্রামে আসেন। ম্যাচের আগের দিন ঐচ্ছিক অনুশীলনে লিটন দাস, তাসকিন আহমেদ ছাড়া অধিকাংশই নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিনের একটা ধারায় ছেদ ঘটিয়েছে প্রথম দুই ওয়ানডেতে। বাংলাদেশের অধিকাংশ ওয়ানডে জয়ে তিন পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। অথচ মিরপুরে প্রথম দুই ওয়ানডেতে খেলেছেন দুই পেসার। শেষ ম্যাচেও তিন পেসার খেলানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের বাজে ফর্মের কারণে তার জায়গায় হাসান মাহমুদকে খেলানো অনেকটাই নিশ্চিত। চট্টগ্রামের উইকেটে পেসারদের জন্য খুব বেশি সুবিধা থাকবে না। আফিফ হোসেনের জায়গায় শেষ ম্যাচে তৌহিদ হৃদয়কে দেখার সম্ভাবনাও কম মনে হচ্ছে। ফিল্ডিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ উইকেট নিয়ে বলেন, ‘এটা আলাদা উইকেট। তাই একই আচরণ করবে বলে আশা করছি না। আমরা আমাদের সেরাটা বের করার চেষ্টা করছি। তবে তুলনামূলকভাবে মিরপুরের উইকেটে সুবিধা বেশি।’

ইংল্যান্ড দলের মনোযোগ সব কন্ডিশনেই নিজেদের প্রমাণ করার দিকে। মিরপুরের চেয়ে চট্টগ্রামের উইকেট কিছুটা ব্যাটিংবান্ধব। সবশেষ এই মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে চারশ ছাড়ানো স্কোর করেছিল ভারত। ঈশান কিষান করেছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি। তেমন উইকেট হলে ইংলিশদের জন্য আরও সুবিধা হবে। তবে উইকেট যেমনই হোক, মানিয়ে নিতে প্রস্তুত তারা।

ভারতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড সেরা ছন্দে থাকতে চায়। পেসার মার্ক উড বলেন, ‘বাংলাদেশকে তাদের কন্ডিশনে হারানো খুবই কঠিন। কিন্তু আমাদের দলটি ভালোভাবে তৈরি রয়েছে। গতিময় বোলার, সুইং বোলার, সিম বোলারসহ আমাদের দুর্দান্ত স্পিনার রয়েছে। সিরিজে আমাদের বোলাররা সত্যিই অনেক ভালো বোলিং করেছে।’ এতদিনের গর্বের রেকর্ডে ছেদ পড়লেও শেষ কামড় দিতে প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শক্তি প্রমাণের সঙ্গে আত্মবিশ্বাস তৈরির ম্যাচ হতে পারে এটা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ, মরিয়া, রুখতে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন