“অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১২ হাজার এর মতো রোহিঙ্গা ঘর ছাড়া হয়েছে ”
অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২ হাজার শেল্টার পুড়ে গেছে

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, এক রোহিঙ্গা যুবক আটক

fec-image

অনন্ত ২ হাজারের বেশি ঘরবাড়িসহ স্থাপনা পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১২ হাজার রোহিঙ্গা

কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে লাগা আগুন তিন ঘন্টার পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এতে অনন্ত দুই সহস্রাধিক ঘরসহ নানা স্থাপনা পুড়ে গেছে। তবে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় সন্দেহজনক এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করা হয়েছে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, রবিবার (৫ মার্চ) আনুমানিক ৩ টার সময় রোহিঙ্গা উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের ডি-ব্লকে আগুন লাগার এ ঘটনা ঘটে।

তবে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। আটক রোহিঙ্গা যুবকের নাম ও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

এ সময় মিজানুর রহমান বলেন, বিকালে বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের ডি-ব্লকে আকস্মিক আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে আগুন মুহুর্তের মধ্যেই আশ্রয় শিবিরটির কয়েকটি ব্লকসহ আশপাশের বিভিন্ন ক্যাম্পে ছড়িয়ে ভয়াবহরূপ ধারণ করে। খবর পেয়ে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে আরও কয়েকটি ইউনিট তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে অনন্ত ৩ ঘন্টা চেষ্টার পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

আগুন শত শত রোহিঙ্গাদের বসত ঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা পুড়ে গেছে। ঘটনায় কেউ হতাহত এবং এখনো ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমান নির্ধারণ করা হয়নি।

আরআরআরসি বলেন, আগুন লাগার ঘটনায় সন্দেহজনক এক রোহিঙ্গা যুবককে পুলিশ আটক করেছে। আগুনের সূত্রপাতের কারণ, কিভাবে আগুন ছড়িয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।

ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার সদর স্টেশনের উপ-পরিচালক অতীশ চাকমা বলেন, ” আগুন নিয়ন্ত্রণে উখিয়া, চকরিয়া, কক্সবাজার, রামু ও টেকনাফ স্টেশনের ১১ টি ইউনিট কাজ করেছে। প্রায় ৩ ঘন্টা পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ধারণে কাজ চলছে। “

প্রাথমিকভাবে বালুখালী ১১ নম্বর আশ্রয় শিবিরের ডি-ব্লকের একটি বসত ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা গেছে। আগুনের সূত্রপাতের কারণে নিরূপনে কাজ চলছে।

এপিবিএন পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের বরাতে উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আগুনে বালুখালী ১১ নম্বর আশ্রয় শিবিরের বি-ব্লক, ই-ব্লক ও ডি-ব্লকের সবগুলো এবং ক্যাম্পটির অন্যান্য ব্লকের অধিকাংশ বসত ঘর পুড়ে গেছে। এছাড়া ৯, ১০ ও ১২ নম্বর আশ্রয় শিবিরের কিছুসংখ্যক বসত ঘরও পুড়ে যায়।

আগুন লাগার ঘটনায় অনন্ত ২ হাজারের বেশী বসত ঘর পুড়ে গেছে এবং অনন্ত ১২ হাজার রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি ” বলেন, ওসি।

আরআরআরসি জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের রাতে আশ্রয়ের আশপাশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরের কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল, মসজিদ ও মাদ্রাসায় থাকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভূক্তভোগীদের মাঝে বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় রাতে শুকনো খাবার বিতরন করা হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আলোচনা চলেছে বলে জানান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অগ্নিকাণ্ড, আটক, ক্যাম্পে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন