টেকনাফে কোস্ট গার্ডের অভিযানে নারী ও শিশুসহ উদ্ধার ৪৪

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে মানব পাচারের ডেরায় বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ ৪৪ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড।
উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশী ও ৪১ জন রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষ রয়েছে। এর মধ্যে ২৯ নারী ও ১২ জন শিশু। তবে এ অভিযানে কোন পাচারকারীকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল ৩ টায় কোস্ট গার্ডের টেকনাফ বিসিজি স্টেশন মিলনায়তনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে লে. কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশিদ তানভির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, সাগর পথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশুসহ বিপুল সংখ্যক বাক্তিকে টেকনাফের বাহারছড়ার পিনিস ভাঙ্গা পাহাড়ি এলাকায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। তথ্যের ভিত্তিতে, শুক্রবার মধ্যরাত ২ টা হতে সকাল ৭ টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চলাকালে কোস্ট গার্ড সদস্যরা উক্ত পাহাড়ের চূড়ায় পাচারকারীদের গোপন আস্তানা হতে পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দি থাকা নারী ও শিশুসহ ৪৪ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে।
উদ্ধারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরি, সুবিধাজনক কর্মসংস্থান, উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন, অল্প খরচে বিদেশ যাত্রা এবং বিনা অর্থে প্রেরণ করে পরবর্তীতে কর্মস্থলে কাজের মাধ্যমে খরচ পরিশোধের সুযোগের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় গমনে উদ্বুদ্ধ করে টেকনাফের গহীন পাহাড়ে গোপন আস্তানায় জিম্মি করে রেখেছিল। পরবর্তীতে, পাচারকারীরা তাদের সুবিধাজনক সময়ে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন উপকূল হতে বোট যোগে মালয়েশিয়ায় পাচার করার পরিকল্পনা করে।
তারা আরও জানায় যে, পাচারকারীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করার চেষ্টা করছিল।
উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগী উখিয়া উপজেলার সোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সুজন বলেন, তিনি একজন সুপারি ব্যবসায়ী। সুপারি কিনতে টেকনাফে এসেছিল। একজন বৃদ্ধ লোক সুপারির কথা বলে সিএনজি যোগে মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন ব্যক্তি অপর সিএনজি যোগে এসে গতিরোধ করে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। পরে দেখি গহীন পাহাড়ে হাত পা বেঁধে মালয়েশিয়া পাচারের কথা বলে মুক্তিপণ দাবী করে। এসময় তার পকেটে থাকা ব্যবসার ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
টেকনাফ বিসিজি স্টেশনের লে. কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশিদ তানভির জানান, অভিযান চলাকালীন কোস্ট পার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটক করতে কোস্ট গার্ডের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে।
মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড অবিষ্যতেও এখরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

















