আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস
আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস। দিবসটিকে কেন্দ্র করে বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়। সেদিন থেকেই দিবসটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আগে তিন বাহিনী ভিন্ন ভিন্ন দিনে দিবসটি পালন করত। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তিন বাহিনী দিবসটিকে সম্মিলিতভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই থেকে ২১ নভেম্বরকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ভোরে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। দিবসটিকে কেন্দ্র করে সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনীর ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি-অগ্রগতি কামনায় দোয়া করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোত্সর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আবু মোজাফ্ফর মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব চৌধুরী এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া তিন বাহিনীর প্রধানগণ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
এদিকে ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা জানাবেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৯ জন সেনা, দুজন নৌ এবং তিনজন বিমানবাহিনী সদস্যকে ২০১৮-১৯ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী, সামরিক সচিব, প্রেসসচিব ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনী প্রধান নৌবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেবেন। এ ছাড়া বিমানবাহিনী প্রধান ২২ নভেম্বর বিমানবাহিনীর এবং সেনাবাহিনী প্রধান ২৫ নভেম্বর সেনাবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেবেন। ঢাকা ছাড়াও সাভার, বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, রংপুর, রাজেন্দ্রপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ/স্থাপনা এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।