আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেলেন মাইকেল চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফের মুখপাত্র মাইকেল চাকমা আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়।
বুধবার (৭ আগস্ট) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মাইকেল চাকমাকে পাওয়া গেছে আয়না ঘর থেকে। ওর বন্ধুদের কাছে দিয়ে গেছে। তার সাথে তার বন্ধু আছেন। নিরাপত্তার কারণে নাম মুছে দিলাম। তিনি ফোনে নিশ্চিত করেছেন। ওকে খুঁজে পাওয়ার জন্য হেবিয়াস কর্পাস করেছিলাম। স্বস্তি পেলাম।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন। এরপর থেকে তাঁর কোন হদিস মিলেনি।
মাইকেল চাকমাকে উদ্ধার ও মুক্তির দাবিতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনসমূহ, প্রগতিশীল ও মানবাধিকার সংগঠন, শিক্ষক-নাগরিক সমাজসহ পরিবারের লোকজন নানা কর্মসূচি পালন করেছেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সিএইচটি কমিশনসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিগণও মাইকেল চাকমা গুমের উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর সন্ধান দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্ট নারায়ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের ও মাইকেল চাকমার সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলেও এতদিন সরকারের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হলো।
ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি নুতন কুমার চাকমা এক বিবৃতিতে মাইকেল চাকমাকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে দীর্ঘ ৫ বছরের অধিক বন্দী করে রাখে। তিনি এই গুমের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।
তিনি মাইকেল চাকমার সন্ধান ও তাকে উদ্ধারের দাবিতে যেসব সংগঠন ও ব্যক্তি সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করেছেন, প্রতিবাদসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, আগামীতে দেশে গুমের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
ইউপিডিএফ নেতা অবিলম্বে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দুঃশাসনের সময় কারাগারে আটক ইউপিডিএফ নেতা আনন্দ প্রকাশ চাকমাসহ সকল রাজবন্দীদেরও মুক্তি দেয়ার দাবি জানান।