“পাহাড়ি ফল শুধু সুস্বাদুই নয়,

এগুলো আমাদের অর্গানিক খাদ্য-ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি : পার্বত্য উপদেষ্টা

fec-image

পার্বত্য উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “পাহাড়ি ফল শুধু সুস্বাদুই নয়, এগুলো আমাদের অর্গানিক খাদ্য ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেন, পাহাড়ি ফল মেলার এবারের আয়োজন যেন শুধু একটি প্রদর্শনী নয়, বরং পাহাড়ের মাটির ঘ্রাণ, নারীর শ্রম, আর প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের এক অপূর্ব সাক্ষাৎ।

রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে পাহাড়ি ফল মেলার (১-৫ জুলাই) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির উদ্বোধনী বক্তব্যে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, “রাজধানীর ব্যস্ত ও যান্ত্রিক জীবনে আমরা যাতে সুস্থ থাকতে পারি, এ কথাটি মাথায় রেখে আমরা অর্গানিক ফলের ভান্ডার নিয়ে পাহাড়ি ফল মেলার এবারের আসরকে সাজিয়েছি। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণও পাহাড়ি ফল মেলার আয়োজনে মনে প্রাণে সোচ্চার আছেন।

আমরা এ পাহাড়ি ফল মেলার মধ্য দিয়ে সবাই একাকার হতে চাই। আমরা চাই রাজধানী থেকে একটি ফল ‘হাব’ তৈরি করতে, যেখানে ঢাকাবাসী সরাসরি পাহাড়ি ফলের স্বাদ পাবে। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পাহাড়ি নারীরা অর্গানিক ফল চাষে রাখছেন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।

মন্ত্রণালয় তাঁদের জন্য নানা প্রণোদনা ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের গবেষণায় এখন পাহাড়ে বছরে দু’বার ফল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে, এ এক বৈপ্লবিক অগ্রগতি বলে তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক যোগ করেন, অন্যান্য এলাকায় ফল টিকে থাকে রাসায়নিক স্প্রের কারণে, আর পাহাড়ে ফল পঁচে যায় কারণ ওগুলো প্রকৃতিই রক্ষা করে। তাই পাহাড়ি ফল মানবদেহে যেমন উপকারী, তেমনি পরিবেশবান্ধবও। একটি অনলাইন ফল হাব তৈরির কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।

যেখানে পাহাড়ি ফলের মূল্য, মেয়াদ, পরিমাণসহ সব তথ্য থাকবে। ফলে শহরের মানুষ পাহাড়ি ফলের স্বাদ পাবেন আরও সহজে এবং কৃষকরাও পাবেন ন্যায্য মূল্য বলে জানান সচিব আব্দুল খালেক।

এবারের পাহাড়ি ফল মেলায় থাকছে- পাহাড়ে নারীদের চাষকৃত অর্গানিক ফলের ভান্ডার, প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ফল- যেখানে নেই কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক স্প্রে। আড়াই কেজি ওজনের “ব্রুনাই কিং” আম, চিয়াংমাই আম, রাম্বুটান, প্যাশন ফ্রুট, বিদেশি পেঁপে, খাঁটি পাহাড়ি আনারস, কাঁঠাল, আম ও কলা পাহাড়ি ফল মেলাকে করে তুলেছে আকর্ষণীয়।

পাহাড়ি ফল মেলা উদ্বোধনী আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল খালেক। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সরকারের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন,

পার্বত্য চট্টগ্রাম টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা। এছাড়া পাহাড়ি মেলায় আগত দর্শনার্থী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও এর সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছিল বেইলি রোডের পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণ।

এই মেলার মাধ্যমে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনের গল্প, সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে রাজধানীবাসীর একটি নিবিড় পরিচয় ঘটছে। ফলের স্বাদ ছাপিয়ে এক অনুভূতির বিনিময় মঞ্চ হয়ে উঠছে এই আয়োজন। উদ্বোধন শেষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন পার্বত্য এলাকার শিল্পীরা, যা দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে তোলে।

মেলায় পার্বত্য তিন জেলা ও রাজধানীসহ মোট ৩০টি স্টল অংশ নিয়েছে। পাহাড়ি ফল মেলা ১-৫ জুলাই প্র্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে রাত ০৮ টা পর্যন্ত চলবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন