কক্সবাজারে প্রতারক যুবক আটক

fec-image

কক্সবাজার সদরের বিভিন্ন ব্যক্তিদেরকে গাড়ি বিক্রির ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. হাসানুল হক নামক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাতে শেষ নয়, ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান থেকেও নিয়েছেন কোটি টাকা। ব্যবসার আড়ালে টাকা হাতিয়ে নেওয়া যার নেশা ! ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে ডজনাধিক মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রতারণা মামলায় পুলিশ তাকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। যার সিআর মামলা নং-৯২৪/২২। ওই মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন উখিয়ার ইনানী নিদানিয়া এলাকার বাসিন্দা মৃত হাবিব উল্লাহর ছেলে।

আটক মো. হাসানুল হক কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে এবং শহরের আলির জাহাল গ্রামীণ ইজিবাইক হাউসের স্বত্বাধিকারী।

সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ রমিজ নামক ব্যক্তির মালিকানাধীন মারুতি সুজুকি আলটু ব্রান্ডের (৮০০ সিসি) গাড়ি মাসিক ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেয় মো. হাসানুল হক। পরে নিজেকে ওই গাড়ি মালিক সাজিয়ে জয়নাল আবেদীনের কাছে বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআর মামলা নং-৯২৪/২২ দায়ের করেন জয়নাল আবদীন।

ওই মামলা গত বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে আটক করে পুলিশ। সে বর্তমানে কারাগারে আছে।

কিছুদিন আগেও চকরিয়ার একটি চেকের মামলা গ্রেফতার হয়েছিল মো. হাসানুল হক। যার মামলা নং -সিআর ৮৪১/২২। এরকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে মো. হাসানুল হকের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত মো. হাসানুল হকের বিরুদ্ধে যেকটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে তা হলো, ঢাকা সিএমএম কোর্টের মামলা নং-১৯৮৮৩/২০, ১৯৮৮৪/২০, সিআর মামলা নং-০৫/২০২০, ১৬৯/২১।

মো. হাসানুল হকের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধেও মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। যার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১ এর মামলা নং-৪১৭/২১। তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলে জানা গেছে। একই আদালতে আরেকটি মামলা নং-৪২০৭/২২ রয়েছে মো. হাসানুল হকের বিরুদ্ধে।

এ সময় রফিকুল ইসলাম নামের আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ৩টি গাড়ির জন্য মো. হাসানুল হককে নগদ ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এখনও গাড়ি কিংবা টাকা কোনটি ফেরত পান নি। এ বিষয়ে চকরিয়া থানায় অভিযোগ করলে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বৈঠক থেকে চলে আসেন হাসান। পরে নতুন গাড়ি দেওয়ার আশ্বাসে একটি পুরাতন গাড়ি বিক্রি করেন রফিককে। ওই গাড়ির কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ করলেও টাকার রশিদে তারিখ ভুল করেছেন। যা সম্পূর্ণ ইচ্ছেকৃত। সাড়ে দশ লাখ টাকার বিষয়ে কথা বললে বিভিন্ন সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি-ধামকি প্রদান করেছেন। মো. হাসানুল হকের প্রতারণামূলক আচরণের কারণে গাড়ি বের করতে পারছেন না রফিকুল ইসলাম।

অনুসন্ধান করে আরও জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যক্তি, ব্যাংক, এনজিও থেকে ব্যবসার কথা বলে প্রচুর টাকা ঋণ নিয়েছেন মো. হাসানুল হক। যার মধ্যে কয়েকটি ডকুমেন্ট হাতে এসেছে। ব্রাক ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনজিও রিক, পপি, আইডিএফসহ অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন।

এছাড়া লং লাইফ কোম্পানি, এশিয়া কার কোম্পানি, কনফিডেন্স গ্রুপের মামলা রয়েছে মোঃ হাসানুল হকের বিরুদ্ধে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আটক, কক্সবাজার, প্রতারক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন