কক্সবাজারে প্রার্থীদের আরামের ঘুম হারাম
কক্সবাজার প্রতিনিধি:
দরজায় কড়া নাড়ছে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন। প্রচার-প্রচারণায় নতুন নতুন কৌশলে ব্যস্ত প্রার্থীরাও। নেতা-কর্মী সংগঠিত করে প্রচার-প্রচারণার সুবিধার্থে বিকেল থেকে রাত অবধি নির্ঘুম রাত কাটছে প্রার্থীসহ কর্মীরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা, সঙ্গে ছড়াচ্ছেন রকমারি প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি।
কক্সবাজার পৌর পিতার আসন দখলে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী। তবে বর্তমান মেয়র নাগরিক কমিটির সরওয়ার কামাল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ার পুনরায় দখল নিতে।
এ পৌরসভায় মোট ভোটার ৮৩ হাজার ৭২৮ জন। নৌকা, নারিকেল গাছ ও ধানের শীষে প্রধান লড়াই হবে বলে ভোটাররা জানাচ্ছেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, নাগরিক কমিটির সরওয়ার কামাল ও বিএনপির প্রার্থী জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি ধানের শীষ, জাতীয় পার্টির জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার লাঙ্গল ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী দলের পৌর আহ্বায়ক জাহিদুর রহমান হাতপাখা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
এদিকে, আরামের ঘুম হারাম হয়েছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানের।
তিনি বলেন, চোখে আর ঘুম নাই, ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাতে তিন ঘণ্টাও ঘুমাতে পারি না। শুধু আওয়ামী লীগই না, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের নেতাদেরও একই অবস্থা। আমার কর্মীরা ঘুমাতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, পৌরসভায় সব জায়গায় যাচ্ছে দলের সবাই, আমার জন্য কাজ করছে। অনেকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করছেন। আমার বিশ্বাস আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।
প্রচার-প্রচারণা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, প্রতিদিন রুটিন মাফিক কাজ করছি। দলীয় অফিস থেকে নেতা-কর্মীদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
নাগরিক কমিটির মেয়রপ্রার্থী বর্তমান মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, জনগণের জন্য নিজের অর্ধেক জীবন চলে গেছে। ২৯ বছর কাউন্সিলর-মেয়র ছিলাম। পৌরবাসীর জন্য অনেক কিছু করেছি, এজন্য তো আমাকে ভালোবেসে বারবার ভোট দেয়। এবারেও বিপুল ভোটে আমি বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ।
প্রচার প্রচারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তফসীল ঘোষণার পর থেকে ঘুম তো হারাম হয়ে গেছে। তবুও সকাল-বিকাল ছুটে যাচ্ছি ভোটারদের কাছে।
অপরদিকে বসে নেই ধানের শীষের প্রার্থীও। বিএনপির প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেয়া আচরনবিধি অনুযায়ী নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। দলের শীর্ষ নেতারাও বসে নেই। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ।
আওয়ামী লীগ অফিসে নির্মিত নৌকা শোভা পাচ্ছে। সরওয়ার কামালের অফিসে সাজানো হয়েছে নারিকেল গাছ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন অফিস। অন্যদিকে বিএনপি অফিস সেজেছে সত্যিকারের তাজা ধানের শীষে।
এসব প্রতীককে বিজয়ী করার জন্য মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ঘুম হারাম হয়ে গেছে কর্মীদেরও।
সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, পৌর মেয়র নির্বাচনে প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে সাতকানিয়া-লোহাগাড়াবাসী। তাই তাদের মন জয়ে ২৪ ঘণ্টা নানা হিসাব-কৌশল করছেন বিভিন্ন প্রার্থীরা।
ভোটাররা জানিয়েছেন, আগামি ২৫ জুলাই কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে পৌর এলাকায় এখন মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে পর্যটন শহর কক্সবাজারে ততই জমে উঠেছে ভোটের আমেজ। ২৫ জুলাই পৌর নির্বাচনকে ঘিরে পর্যটন শহর কক্সবাজার জুড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। পোস্টারে ছেয়ে গেছে। মাইকিং চলছে দিনভর।
বিজয়ের আশায় প্রধান তিন প্রার্থী সরওয়ার কামাল নারিকেল গাছ মার্কা, মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান নৌকা ও ধানের শীষ এর সমর্থনে ক’দিন যাবত ব্যাপক গণসংযোগ চলছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের মহল্লায় মহল্লায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে সমর্থকরা। দীর্ঘদিন পর এখানে নির্বাচন পেয়েছে বলে শহরবাসী বিপুল উদ্দীপনায় নির্বাচন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।