ঘুমধুমে ছাত্রের হত্যা নাকি আত্মহত্যা! আটক ৩

fec-image

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে ফরিদ আলম নামে এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু কোলালপাড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ওড়না পেছানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ফরিদ আলম সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সে ঘোনারপাড়া এলাকার আবদুল মোনাফের ছেলে।

এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকৃতরা হলো নিহত ফরিদের মামাতো ভাই মিজান, তার বড় বোন ফরিজা বেগম এবং তার স্বামী নুরুল আলম (কালু খলিফা)।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঘুমধুম পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিশেষজ্ঞ দল। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে স্থানীয় ঘুমধুম ফাড়ি পুলিশ ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন।

নিহত যুবক আত্মহত্যা করেছে নাকি পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছে এমন সন্দেহ দূর করতে লাশটি ময়নাতদন্তের বান্দরবানে নেওয়া হয়েছে।

অবশ্য নিহতের পরিবারের লোকজনের দাবী ফরিদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ফরিদের পিতা জানান- সন্ধ্যা ৭টার দিকে কেউ একজন ফোন করে ঘর তার ছেলেকে ডেকে নেয়। পরে রাত ১০টার দিকে ফরিজা বেগমের বাড়িতে ছেলের আত্মহত্যা হয়েছে খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি।

ঘটনাস্থলে লাশের অবস্থা দেখে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা তার। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনার বিষয়টি সন্দেহজনক বলে অবহিত করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় বিনয়ী এবং প্রতিবাদী স্বভাবের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল ফরিদ আলম। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক কাজেও সম্পৃক্ত ছিল।

নিহতের ভাই শাহা আলম জানান- তাদের পিতা আবদুল মোনাফের সাথে কাদের মেম্বারের উত্তরাধিকার সূত্রে জায়গাজমির বিরোধ ছিল। আর ফরিদ প্রায় সময় কাদের মেম্বারের মেয়ে ফরিজার বাড়িতে ইন্টারনেট (ওয়াইফাই) ব্যবহার করার জন্য যেতো। এদিকে ফরিদের গলায় ওড়না পেছানো থাকলেও লাশ খাটের উপর পড়ে ছিল। এই কারনে ঘটনাটি হত্যা হিসেবে দেখছেন তিনি।

এদিকে ঘটনার ৯ঘণ্টা আগে ফরিদ তার ফেসবুক পেইজে আবেগজড়িত একটি রোমান্টিক গান শেয়ার করেন। সারাদিন বিভিন্নজনের সাথে কথাও বলেছেন।

ফরিদের বাল্য বন্ধ্য আবদুল্লাহ আল ফাইসাল জানান- ফরিদের সাথে তেমন কোন নারীর সম্পর্ক ছিল না। সবসময় টেনশন মুক্ত থাকতো। ঘটনার দিন বিকালেও তার সাথে হাসিখুশি কথা বলেছি। কিন্তু এমন নির্মন ঘটনা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায়না।

এই ব্যাপারে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান- ঘটনাস্থলে যে অবস্থায় লাশ পড়ে ছিল তাতে ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। পুলিশের তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে ফরিদের লাশ উদ্ধারের পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনার সুষ্টু তদন্ত দাবী করেছে এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা, ফেসবুক, বান্দরবান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন