ঈদগাঁওতে এনজিও ঋণের কিস্তি থেকে মুক্তি পেতে নারীর আত্মহত্যা!

fec-image

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকা দিতে না পেরে হুমাইরা আক্তার নামের ৪ সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে।

নিহত হুমাইয়ার আক্তার ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের মধ্যম ভোমরিয়াঘোনা এলাকার মো. কালুর স্ত্রী।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ভোর রাতে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে নিজ বসতঘরে।

নিহতের কন্যা শাবনুর আক্তার জানান, সেহরি খাবার গ্রহণের আগে তার মা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে। পরে সবার অগোচরে বিষপান করে বমি করতে থাকে। বিষপানের বিষয়টি টের পেয়ে তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীনবস্থায় সকাল ৮ টার দিকে তিনি মারা যান। একই দিন ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে আছরের নামাজের পর জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

কন্যা শাবনুর আক্তার আরো জানান, তার মা’কে সপ্তাহে ৫ দিন বিভিন্ন এনজিও থেকে নেয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হতো। ঘটনার দিনও দুইটি কিস্তি পরিশোধের ধার্য দিন ছিল। চরম আর্থিক অভাবের সংসারে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করা মহিলা হিসেবে তার জন্য চরম কষ্ট সাধ্য ছিল। হয়তো এ হতাশা ও অসহ্য ঋণের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। এছাড়া পরিবারে আর কোন সমস্যা ছিলনা।

নিহতের স্বামী মো. কালু জানান, বিষ পানের যখন সে তার স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে সে কাপড়ে পায়খানা পেশাব করে। যখন হাসপাতালে পৌঁছেন তখন থেকেই কর্মরত নার্স এবং চিকিৎসকরা বারবার বলেন, তার পায়খানা পরিস্কার এবং এর দুর্গন্ধটা বন্ধ না হলে তাদের দ্বারা চিকিৎসা করা সম্ভব না বলে চিকিৎসায় অবহেলা করেন। জরুরি চিকিৎসা সেবা পেলে হয়ত সে সুস্থ হতো বলে অক্ষেপ করেন।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল হাকিম। তিনিও আত্মহত্যার পেছনে একই ধারণা পোষণ করেন।

ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, আত্মহত্যার বিষয়টি তিনি স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছেন। বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের জন্য অনুমতি নিতে থানায় যোগাযোগ করলে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে আবেদন করার পরামর্শ দেন বলে জানান ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা, ঈদগাঁও
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন