ছাত্রীর সঙ্গে কলেজশিক্ষকের ‘আপত্তিকর ভিডিও’ ফাঁস

fec-image

ঠাকুরগাওঁয়ের পীরগঞ্জে বদরুল হুদা নামে এক কলেজশিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হয়েছে। এক ছাত্রীর সঙ্গে তার ওই আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি গত ১০ আগস্ট থেকে ফেসবুকে ঘুরপাক খেতে দেখা যাচ্ছে। আর এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন ছাত্র-জনতাসহ স্থানীয়রা।

তবে এ ঘটনাটি ভিত্তিহীন বলে দাবি করছেন পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক বদরুল হুদা। এ ছাড়া একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিষয়টিকে বানিয়ে প্রচার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে বলেও দাবি তার।

স্থানীয় ও কলেজ শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি কলেজের এক ছাত্রীকে পরীক্ষায় ভালো নম্বর দেয়ার কথা বলে নিজের কক্ষে ডেকে নেন বদরুল হুদা। শুধু তাই নয়, তার বন্ধুর স্থানীয় একটি শিশু পার্কের খাস কামরায় নিয়ে গিয়েও ওই ছাত্রীর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক গড়েন। একই সঙ্গে ঘটনাগুলোর ভিডিও চিত্র মোবাইলের ক্যামেরায় ধারণ করে রাখেন তিনি।

আরও জানা যায়, ভালো নম্বর দেয়াসহ নানা প্রলোভনে কলেজের অন্য সুন্দরী ছাত্রীদের সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই সহযোগী অধ্যাপক। ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রেখে ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেইলও করতেন তিনি। এসব ঘটনার ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেট ও ফেসবুকে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তাদের সঙ্গে বারবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ান তিনি।

লোক লজ্জার ভয় ও পরীক্ষার ভালো নম্বরের আশায় ভুক্তভোগী ছাত্রীরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারেননি।

জানা গেছে, এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকায় কানাঘুষা হলেও বদরুল স্থানীয় শিক্ষক হওয়ায় কেউ তেমনভাবে প্রতিবাদ করতে সাহস করেননি।

তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে বদরুলের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে তার অবাধ যৌন কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। আলোচনা-সামলোচনা হলেও এ বিষয়ে এখনো ব্যবস্থায় কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) কলেজের শিক্ষার্থীরা তার কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানালে কলেজ থেকে দ্রুত সটকে পরেন ওই অধ্যাপক।

পরে তিনি কয়েক দিনের ছুটি চেয়ে দরখাস্ত লিখে পাঠিয়ে দেন বলে জানান কলেজের দায়িত্বরতরা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সারাদেশ কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে, আর এই অধ্যাপকের নোংরামির চিত্র এখন ভেসে বেড়াচ্ছে। কলেজের পরিবেশ ঠিক রাখতে হলে তার পদত্যাগ জরুরি। আর পদত্যাগের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের ঊর্ধ্বতনরা ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রশীদ জানান, অধ্যাপকের কর্মকাণ্ডের কথা শুনেছি, তবে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি আরও ভালভাবে খতিয়ে দেখছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগও নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন