থানচিতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব: আক্রান্ত ৪৫, মৃত্যু ১

fec-image

গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত থানচি উপজেলার দূর্গম সীমান্তবর্তী তিনটি পাড়ার মানুষ ডায়রিয়ার সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। স্থানীয় বড় মদক বাজারের ফার্মেসি হতে সালাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনে এ রোগে প্রাথমিক চিকিৎসা করে চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সাথে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার নদী পথের দুরত্বের কারণে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করার সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসক টিম ছাড়া কোন উপায় না থাকায় আক্রান্ত এলাকা থেকে পাহাড় থেকে মোবাইল ফোনে সংবাদ ছাড়া কোন উপায় নেই । তবে শুক্রবার (২১ মে) সকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১ বৃদ্ধের মৃত্যু খবর জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মার্মা।

মিয়ানমার সীমান্তের জেলার থানচি উপজেলার দূর্গম বড়মদক ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পাতোয়া ম্রো পাড়া, অংগ্যি খুমী পাড়া ও ঙারেসা মুরুং (নারিচা) পাড়ায় এই রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৩টি পাড়ার শিশুসহ প্রায় ৪৫ জন বাসিন্দা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মার্মা বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অংগ্যি খুমী পাড়ার এক বৃদ্ধ মৃত্যুবরণ করেন এবং ৩টি পাড়ার প্রায় ৪৫ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ঝিড়ি ঝর্নার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী বিভিন্ন উৎস থেকে দূষিত পানি পান করায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তাছাড়াও দূর্গম এলাকা হওয়ায় সঠিক চিকিৎসার অভাবে রোগটি দ্রুত সময়ে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে থানচি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গণি ওসমানি বলেন, থানচির দূর্গম কয়েকটি এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার খবর পেয়েছে। ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়ে একবৃদ্ধার মৃত্যুর খবর পেয়েছি। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ের সেখানে একটি চিকিৎসক টিমসহ ১০ হাজার পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট পাঠিয়েছি।

স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, গত ১৯ মে বুধবার হতে মোবাইল যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়া নদীর পথে যাতায়াতের কারণে সঠিক সময়ের চিকিৎসক টিম পৌঁছাতে বিলম্ভ হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন , আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর, জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ের আক্রান্ত এলাকা পর্যাপ্ত পরিমান ঔষধ, সালাইন, পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেটসহ চিকিৎসক টিম পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে ।

তিনি আরও জানান, থানচি সদর এলাকায় গত এক সপ্তাহের ৪-৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগি ভর্তি হয়েছে। তাছাড়া ৩-৪ জন শিশুসহ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীণ রয়েছে। অত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জনবল সংকটে রয়েছে । এ সময়ের চিকিৎসক,নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী সংকট পূরনে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ জরুরী বলেও মনে করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন