নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড়িদের কলা চাষেই ভরসা

fec-image

আশু ত্রিপুরা সংসারের ৬ সদস্য নিয়ে দৌছড়ির পাহাড়ে বসবাস করেন। উপজেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে তার বাড়ি। তার নিজস্ব কোন জমিজমা নেই। কিন্তু সরকারি পরিত্যাক্ত পাহাড়ে কলা ও জুম চাষ করে তার জীবন চলে সারা বছর। আশু ত্রিপুরার কলা বাগান রয়েছে ১০ কানি। পাহাড়ি ঢালুতে করা প্রতিকানি বাগানে কলা গাছ রয়েছে ৮ শতের অধিক। বর্ষায় কিছু কলা গাছ নষ্ট  হলেও সুদিনে তেমন হয় না। এ কারণে আশু প্রতি হাটের দিন বাঁকখালী নদী পথে পার্শ্ববতী রামুর গর্জনিয়া বাজারে নিয়ে গিয়ে যে দাম পায় তাতে বাজার চলে তার। সন্তানরা পড়ালেখা করে পাশ্ববর্তী স্কুলে। তাদের খরচ যোগাতে তিনি ও তার স্ত্রী মিলে বাগানের কাজ করেন। তাদের কলা চাষই ভরসা। কলা বিনে তাদের জীবন অচল।বর্তমানে তারা খুবই সূখে আছেন।

এভাবে আশু ত্রিপুরার মতো পাহাড়ি জনগোষ্ঠী চাইলা অং চাক, থ্যোইলা মার্মা, মো: আবুল কালাম, ছৈয়দ কাশেম ও নবী হোসেন সকলেই কলা চষে ভরসা। কলা চাষ করে সূখে জীবন কাটান নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামের এ সব লোকজন। কেননা এ চাষেই তাদের জীবন চলে। এ কলাই এখানকার পাহাড়ি জনবসতির জনপ্রিয় চাষ।

আশু ত্রিপুরা আরো জানান, তার গ্রামে অসংখ্য মানুষ কলা চাষ করে জীবন কাটায়। তার গ্রামের আশপাশের সব গ্রামে সকলেই কলা চাষী। সোনাইছড়ির কলা চাষী নবী হোসেন জানান, তার কলা চাষ করেই জীবনের পথ চলা। জুম চাষ ও অন্যান্য চাষ থাকলেও এখানে তাতে জীবনের চলার নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু কলা চাষের কোন রিক্স নেই তাদের।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো: এনামূল হক জানান, নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়গুলো খুবই উর্বর। কৃষকরা যা রোপন করেন তাতে ভালো ফলন আসে। বিশেষ করে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় চাষ কলা এখানকার কৃষকদের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল। প্রথমটা তো ধান। তাই তারা এ চাষ নিরাপদ মনে করেই সংসারের ঘানি টানেন।

তিনি আরো বলেন, এ কলা চাষে সরকার পর্যাপ্ত সহায়তা দেন। তার তথ্য মতে উপজেলায় ১৩ শত হেক্টর কলা বাগান রয়েছে। এ বাগানে প্রকৃতিগতভাবে কলা উৎপন্ন হয়। আর কৃষি অফিস এ বাগান সমূহে সরকার প্রদেয় সুযোগ সুবিধা গুলো প্রদান করেন। এ ছাড়া তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বর্তমানেও কৃষকদের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে প্রশিক্ষণ চলছে।

তিনি আরো বলেন, এ বছর পরিবেশ ও আবহাওয়া ভালো থাকায় নাইক্ষ্যংছড়িতে কলার বাম্পার ফলন হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ত্রিপুরা, পাহাড়ে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন