পর্যটকে সরগরম কক্সবাজার

fec-image

বিজয় দিবসের ছুটিতে দেশের পর্যটন রাজধানী নামে পরিচিত কক্সবাজারে পর্যটকদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্রসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের কোলাহলে প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে। রাস্তাঘাটে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। অপরদিকে মিলছেনা যানবাহন। খালি নেই চার শতাধিক হোটেলের কোন কক্ষ। বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে বাড়ছে হয়রানিও।

হোটেল মালিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি ডিসেম্বর, জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকদের আনাগোনায় বেশ জমজমাট থাকবে কক্সবাজার। ইতোমধ্যে শহরের চার শতাধিক হোটেলের প্রায় কক্ষ ১২ থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ২০ থেকে ২১ ডিসেম্বর ও ২৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর এবং ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আগাম বুকিং হয়ে গেছে। এখন বাকি দিনগুলোরও চলছে বুকিং। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে ছুটির দিনগুলোতে অবকাশ যাপনের জন্য হাজার হাজার পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসেন।

অপরদিকে বিশ্বের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের কোন জাহাজেই সিট খালি মিলছে না। চারিদিকে ঠাঁই ঠাঁই অবস্থা।

দেখা গেছে, বিশ্বের বৃহত্তম এই সৈকতটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। যদিও এই ভিড়ে শীতকালীন পর্যটকদের স্বাভাবিক জোয়ারের একটা প্রভাব আছে। এবার শুক্র, শনিবার ও ১৬ ডিসেম্বর সরকারি ছুটি হওয়ায় অনেকেই একদিন বাড়তি ছুটি নিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশে আছেন। এর প্রভাব চোখে পড়ল কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতেও।

জানা গেছে, প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবসের ছুটির মাধ্যমে নতুন বছরের প্রথম দশদিন পর্যটকের ভিড়ে ডুবে যায় কক্সবাজার। এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটে এসেছে পৃথিবীর দীর্ঘতম এই বীচে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ, মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, সোনাদিয়া, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকাগুলো বিপুল পর্যটক সমাগমে নতুন প্রাণ ফিরে পায়। কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির ও রামুর বৌদ্ধ মন্দিরেও পর্যটক আনাগোনা প্রচুর।

হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারী ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস এর আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগামী ৩১ ডিসেম্বর (থার্টিফাস্ট নাইট) পর্যন্ত তাদের জাহাজে টিকেটের সংকট রয়েছে। এত দিন ভ্রমণপিপাসু লোকজন বের হতে পারেননি নানা কারণে। এখন প্রত্যেকদিন যাত্রী ও পর্যটকরা টিকেটের জন্য যোগাযোগ করছে।

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, এ মাসের শুরু থেকে বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজার। হোটেল মোটেলে ঠাঁই নেই অবস্থা। সেন্টমার্টিনগামী জাহাজসমূহের টিকেটও আগাম বুকিং হয়ে যাচ্ছে। তিনি আশা করেন এ মাসে কক্সবাজারে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সাংবাদিক দম্পতি আনিছ-শারমিন বলেন, ‘গত দুই বছর আসা হয়নি। তাই এবার ছুটিটা কাজে লাগিয়ে দিলাম।’ অনেক ভালো লাগছে বেড়াতে এসে। দেখলাম ভিড়ের মাঝে পর্যটকরা কক্সবাজারে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন সে জন্য সাদা পোশাকধারী পুলিশ ও বীচে ট্যুরিস্ট পুলিশ বেশ সক্রিয় রয়েছে। তা অত্যান্ত ভালো হয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে চার শতাধিক হোটেল, গেস্ট হাউজ ও কটেজ পর্যটকে ভরে গেছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস ভরপুর থাকবে পর্যটক। শীত মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন বেশি ঘটে বলে তিনি জানান।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, বিজয় দিবসের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামে কক্সবাজার সৈকতে। শুক্রবার, শনিবার বিকালে সৈকতের ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্টে পর্যন্ত লাখো পর্যটকের উপস্থিতি দেখা মিলে। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় তৎপর রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটন, বিজয় দিবসে, সমুদ্র সৈকত
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন