বাঙালিদের বৃহৎ নৃ-গোষ্ঠী বললে শুনতে কেমন লাগবে: সন্তু লারমা

Shantu-Larma

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:
সরকারের দেয়া ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ নামটি প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতির দাবি আবার জানিয়েছেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে এক আলোচনায় এই দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের চেয়ারম্যান।

সন্তু লারমা বলেন, “আমরা সাংবিধানিকভাবে আদিবাসী হিসেবে পরিচিত হতে চাই। কিন্তু আমাদের সে স্বীকৃতি না দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে পরিচয় দেয়া হচ্ছে। নৃ-গোষ্ঠী কেবল আমরা না, বাঙালিরাও নৃ-গোষ্ঠী। আমরা যদি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হয়ে থাকি তাহলে তারা বৃহৎ নৃ-গোষ্ঠী। তাদের (বাঙালিদের) এটা শুনতে কেমন লাগবে?”

কাপেং ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দশক: অর্জন ও বাংলাদেশের আদিবাসীদের অবস্থা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় নিজেদের বঞ্চনা নিয়ে ক্ষোভও জানান সন্তু লারমা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা বলেন, “আমরা ৪৩ বছর ধরে শোষিত হয়ে আসছি। অনেকেই আমাদের আশা ও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কিন্তু আমাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না।” “কোন পথ অবলম্বন করলে আদিবাসীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে,” সমবেতদের কাছে প্রশ্ন রাখেন এক সময়ের এ্ই গেরিলা নেতা।

সভায় সাবেক তথ্য কমিশনার সাদেকা হালিম বলেন, “আদিবাসীদের দুই দশকের অর্জন খুবই সীমিত। তবে সব কিছু অর্জনের জন্য সময়ও প্রয়োজন। বিশ্বের কোথাও তেমন হয়নি। তাদের সবচেয়ে বড় যে স্বাধীনতা প্রয়োজন, তা হলো রাজনৈতিক স্বাধীনতা।”

আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, “যে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে লড়াই করেছি, সেই আমরাই জাতিসংঘের আদিবাসী সংক্রান্ত ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করি নাই। অথচ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো দেশও এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার।”

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাপেং ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মঙ্গল কুমার চাকমা। আলোচনা করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আদিবাসী কালচারাল ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ছন্দ্রা ত্রিপুরা, অক্সফামের বাংলাদেশ মিশনের প্রধান স্নেহাল ভি সনেজি প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন