বান্দরবানে নোবেলের বেসামাল জীবনাচরণ, বিব্রত স্থানীয়রাও
কথিত প্রেমিকাকে নিয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে সারাদিন শহরে ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে উদ্ভট আচরণ, হোটেলে এক ব্যক্তিকে মারধর ইত্যাদি অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে
ভারতের রিয়েলিটি শো ‘‘সারেগামাপা’’ থেকে উঠে আসা তরুণ গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে নিয়ে আবারও সমালোচনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি তিনি বান্দরবান ভ্রমণে গিয়ে মাদক সেবনসহ একের পর এক বিতর্কিত কাণ্ড ঘটাচ্ছেন। শহরের সর্বত্র এখন নোবেলকে নিয়ে আলোচনা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে এক কথিত প্রেমিকাসহ আরও একজনকে নিয়ে বান্দরবানের থানচি উপজেলার রেমাক্রিতে ভ্রমণ করেন তিনি। এ সময় প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে নোবেল সেই ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ।
সূত্র আরও জানায়, এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার (২৫ আগস্ট) রাতে বান্দরবান শহরে যান নোবেল। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বান্দরবান সদরের রুমা বাসস্টেশন এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন তারা। পরদিন (২৬ আগস্ট) সকালে হোটেল থেকে বের হয়ে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় নেশাজাতীয় দ্রব্য খেয়ে ঘোরাঘুরি এবং উদ্ভট আচরণ শুরু করেন স্থানীয়দের সঙ্গে।
তার এমন কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত ও বিরক্ত হন। সন্ধ্যার দিকে হোটেলে ফিরে যান তিনি। দিবাগত রাত ১২টার দিকে হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে এসে মদপানের পাশাপাশি চিৎকার ও শোরগোল শুরু করেন নোবেল। এ সময় তাকে শান্ত করতে গিয়ে ব্যর্থ হয় হোটেল কর্তৃপক্ষ।
তার আচরণে হোটেলে থাকা অন্যান্য অতিথিরা বিরক্ত হলে তাকে বোঝাতে যান এক ব্যক্তি। তাকেও লাঞ্ছিত করেন নোবেল। পরে হোটেলের মালিক মো. জাফর নোবেলের এসব কর্মকাণ্ডের কথা পুলিশকে জানান। তারা এসে রাত ৩টা পর্যন্ত নোবেলকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ভোরবেলা তিনি ঘুমাতে যান।
এদিকে, শুক্রবার নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ বলেন, যে মেয়ের সঙ্গে নোবেল বান্দরবানে গিয়েছে সে একজন এয়ার হোস্টেস। চাকরির আড়ালে মেয়েটা বিভিন্ন স্থানে মাদক আনা-নেওয়া করে। নোবেল-জেবা দুজনেই মাদকাসক্ত।
সালসাবিল মাহমুদ আরও বলেন, আমরা বিবাহিত কিন্তু একসঙ্গে থাকি না। মাদক সেবন, নারীঘটিত কারণেই মূলত নোবেলের সঙ্গে থাকি না। একের পর এক এরকম ঘটনা হলে একজন মানুষের সঙ্গে থাকা যায় না। নোবেলের আসক্তি যে পর্যায়ে গেছে তা এখন আর কারও অজানা নয়। সবকিছু সবার সামনেই ঘটছে।
বান্দরবানের আবাসিক হোটেল গার্ডেন সিটির মালিক মো. জাফর জানান, শিল্পী হিসেবে তাকে আমি একটি রুম দিয়েছি, রুম ভাড়া নেওয়ার সময় তার সাথে এক নারী ছিলেন। প্রথমে তিনি তাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে আবার তাকে বোন হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন।
২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর বিয়ে করেন নোবেল-সালসাবিল।
এ বিষয়ে বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সঙ্গীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলের বিষয়ে আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন