বেঁচে থাকার মতো অবস্থা আমার নেই, আমাকে ক্ষমা করুন’ বলে বুকে গুলি চালান মোতাহার

ফেসবুক লাইভে এসে ‘বেঁচে থাকার মতো অবস্থা আমার নেই, আমাকে ক্ষমা করুন’ বলেই নিজের বুকে গুলি চালান পুলিশ সদস্য মো. মোতাহার হোসেন। মোতাহার রাঙামাটির বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল)।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া টিঅ্যান্ডটি পুলিশ ক্যাম্পের ব্যারাকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে ক্যাম্পটির ইনচার্জ এসআই কুতুব উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘মোতাহার হাস্যোজ্জ্বল ছেলে। কী থেকে কী করে বসলো, বুঝতেছি না। এমনটা কল্পনাতেও ছিল না।’
মোতাহার হোসেন খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মধ্যম মনাপাড়া এলাকার মৃত শীষ মোহাম্মদের ছেলে। গত কয়েকদিন ধরে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার বিবাদ চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় জাহিদ সরকার নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে যুক্ত হন মোতাহার। লাইভ চলাকালীন নিজের বুকে নিজের অস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। এ সময় নিজের কক্ষের দরজা বন্ধ করে রাখেন। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ১৯ মিনিটি ৩৫ সেকেন্ড ফেসবুক লাইভে পারিবারিক বিষয়সহ নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন মোতাহার। ফেসবুক লাইভে তিনি বলেছেন, ‘নানা কারণে বিষণ্নতায় (ডিপ্রেশন) ভুগছি। তাই বেঁচে থাকার আশা হারিয়ে ফেলেছি। যে ডিপ্রেশনে আছি, তাতে থাকার কথা ছিল না। বহু সমস্যায় আছি। বেঁচে থাকার মতো অবস্থা আমার নেই, আমাকে ক্ষমা করুন’ বলে বুকে গুলি চালান মোতাহার।
কাউখালী থানার ওসি পারভেজ আলী বলেন, ‘মোতাহারকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ। তিনি বলেন, ‘মোতাহার কেন এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখছি আমরা। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি।’
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর একই ক্যাম্পে প্রেমিকার সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় বাবার সঙ্গে অভিমান করে নিজের বুকে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মাশফিুকর রহমান (২৩) নামে এক পুলিশ সদস্য।