ব্যাংকে কেএনএফের হামলার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ যা জানালো

fec-image

বান্দরবানের থানচি ও রুমায় ব্যাংকে হামলা-লুটের ঘটনায় অংশ নেয় কেএনএফের শীর্ষ নেতারাও। এমনই ৭ জনকে শনাক্ত ও আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এই ঘটনায় ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা, সেই বিষয়টিও।

যেন কোনো সিনেমার দৃশ্য। অস্ত্র হাতে ইউনিফর্ম পরা কেএনএফ সদস্যরা হঠাৎ ঢুকে পড়েছে থানচি সোনালী ব্যাংকে।

৩ এপ্রিল। তখন দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিট। একে একে যখন সন্ত্রাসীরা ঢুকে পড়ে, তখন ব্যাংকের ভেতরে ছিল গ্রাহকদের ভিড়। অস্ত্রহাতে সন্ত্রাসীদের দেখে হতভম্ব গ্রাহকরা। এসময় হাত উঁচিয়ে কাউকে দাঁড়িয়ে বা কাউকে বসে থাকতে বাধ্য করে সন্ত্রাসীরা। খুঁজতে থাকে ভল্ট আর ক্যাশ। এরপর সবমিলিয়ে মিনিট দশেকের মতো ত্রাস চালিয়ে টাকা নিয়ে বেরিয়ে যায় কেএনএফ সদস্যরা। একই সময়ে লুট চালানো হয় পাশের কৃষি ব্যাংকেও।

এই ছবি ২ এপ্রিল রাতের। রুমা সদরে সোনালী ব্যাংকের ভেতরে অস্ত্র নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে কেএনএফ সদস্যরা। নানাভাবে চেষ্টা করছে ভল্ট ভাঙার। যদিও সেদিন তা ভাঙতে না পেরে অপহরণ করে নিয়ে যায় ব্যাংক ম্যানেজারকে নেজাম উদ্দিনকে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার এসব ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুটি উপজেলায় সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকের তিনটি শাখায় কেএনএফের হামলা-লুটের ঘটনার পুরো ছকই এখন তাদের কাছে পরিষ্কার। যাতে উঠে এসেছে হামলার বিস্তারিত।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) নুরে আলম মিনা বলেন, আমরা যাদের সরাসরি পাবো, তাদের বক্তব্য এবং শারীরিক উপস্থিতি যাচাই করে অপরাধীদের শনাক্ত করবো। ইতোমধ্যে কয়েকজন নারীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করবো। পরে আরো আটক করা হবে।

তিনটি ঘটনায় অংশ নেয় কেএনএফের ৫০ থেকে ১০০ সদস্য। যেখানে সংগঠনটির পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি ছিল নারীরাও। ছিল বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন চেষ্টা চলছে নজিরবিহীন এই হামলার নেপথ্যে কারণ খোঁজার।

ডিআইজি নুরে আলম মিনা বলেন, আটককৃতদের মধ্যে একজন নেতা রয়েছে। বাকি ৫ থেকে ৬ জন বাহিনীটির কর্মী। নেতারা কর্মীদের আশ্রয় ও তথ্য দেয়।

কেএনএফের সোর্স হিসেবে কাজ করা বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে যৌথ বাহিনী। এরই মধ্যে আটক হয়েছে সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা। আরও কেউ কেএনএফকে সহযোগিতা করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে বিভিন্ন সংস্থা।

ডিআইজি নুরে আলম মিনা বলেন, পিবিআিই, সিআইডি আমাদের সহায়তা করছে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান হচ্ছে। এতে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ব্যাটালিয়ন-সবাই সম্পৃক্ত আছে।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটক ৬০ জনের মধ্যে কয়েকজনকে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বান্দরবান আদালতে হাজির করা হয়। পাশাপাশি থানচি, রুমাসহ বিভিন্ন স্থানে চলছে যৌথ বাহিনীর অভিযান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কেএনএফ, পুলিশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন