সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ পরিচালিত হচ্ছে যেভাবে

fec-image

বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সামরিক শাখায় চার শতাধিক সদস্য রয়েছে। এসএমজি, চায়নিজ রাইফেল, একে-৪৭, বার্মিজ একনলা বন্দুকসহ তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে তিন শর বেশি। পার্বত্য চট্টগ্রামের রুমা, থানচি, রোয়াংছড়িসহ গহিন অরণ্যে তাদের বিচরণ। রাঙামাটির বিলাইছড়ির পাশাপাশি মিয়ানমার ও ভারতের মিজোরাম সীমান্তবর্তী এলাকায় রয়েছে তাদের শক্ত ঘাঁটি।

একেবারে প্রশিক্ষিত বাহিনীর মতোই কার্যক্রম শুরু করেছিল বান্দরবানভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের মিজোরামেই অবস্থান নিয়ে ব্যাংক ডাকাতির মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

নাথান বম ২০২২ সালে তৈরি করেন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামের এই বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন। আর গত দুবছরে এই সংগঠনটি হয়ে উঠেছে বান্দরবানের মূর্তিমান আতঙ্ক। প্রথমদিকে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে তারা তহবিল সংগ্রহ করত। পরবর্তী সময়ে টাকার বিনিময়ে দেয়া হয় জঙ্গি সংগঠনকে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ।

কিছুদিন আগেও এই কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের অবস্থান ছিল বান্দরবান পার্বত্য জেলার দুর্গম বিভিন্ন অঞ্চলে। এর মধ্যে তারা দুবার শান্তি আলোচনায় বসেছিল স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার নিয়ে। এই শান্তি আলোচনার সুযোগ নিয়ে দুর্গম অঞ্চল থেকে তাদের অবস্থান হতে থাকে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়। আর এই সুযোগে খুব সহজে হামলা চালাতে পেরেছে একযোগে তিনটি ব্যাংকে। সবশেষ একসঙ্গে হামলা তিনটি ব্যাংকে। এতেই নড়েচড়ে বসেছে বান্দরবানের প্রশাসন।

গত চারদিনে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বান্দরবানের রুমা ও থানচি থেকে সন্দেহভাজন অন্তত ৬০ জনকে আটক করা হয়েছে।

বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের পুরো সাংগঠনিক কাঠামোর সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, কুকি-চিনের প্রধান নাথান বম ওরফে নোবেল ওরফে চিনলুং তাণ্ডবলীলার নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। আর কথিত চিফ অব স্টাফ এবং ব্রিগেডিয়ার ভান চুং লিয়ান ওরফে ভিপির পরিকল্পনায় চলছে এসব ডাকাতি ও হামলার ঘটনা।

অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে সংগঠনের প্রধান নাথান বমসহ শীর্ষস্থানীয় ছয়জন বর্তমানে অবস্থান করছে প্রতিবেশী মিজোরাম সীমান্তে। সেখান থেকে তারা সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

রুমা ও থানচির ব্যাংক ডাকাতিকে ব্যবহার করা হয়েছে কুকি-চিনের নারী সদস্যদের। গত কয়েক দিনের যৌথ বাহিনীর অভিযানে বেথেলপাড়া এবং এডেনপাড়া থেকে গ্রেফতার হওয়া নারীদের মধ্যে কতজন কুকি-চিনের সক্রিয় সদস্য, এখন তারই অনুসন্ধান করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, থানচিতে অলরেডি অভিযান চলছে। সেখানে অনেককে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সংগঠনটিতে মোট কতজন সদস্য রয়েছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে ভিন্ন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কেএনএফ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন