ভারতীয় আগ্রসন’র বিপরীতে শহীদ জিয়ার উদ্যোগ


স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ভারতীয় আগ্রসন বা ‛দ্যা গ্রেট ইন্ডিয়ান ইনভেশন প্ল্যান’ এর বিপরীতে মাত্র একজন ব্যক্তিই ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
প্রেসিডেন্ট জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমব্রেলা কনসেপ্ট নিয়ে দাঁড়িয়ে যান প্রফেসর তালুকদার মনিরুজ্জামান।
প্রফেসর মনিরুজ্জামানের আমব্রেলা কনসেপ্ট এর পোশাকি নাম ছিল সার্ক। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আজ অব্দি যত কিছু অর্জন, সবকিছুই এই কনসেপ্ট বা সার্কের বদৌলতে। তবে এই কনসেপ্ট ২০০২ এর পর আর ফাংশন করেনি। কারন ২০০৪ থেকে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ নির্মিত হয়েছে গওহর রিজভী এবং তার হার্ভার্ড সতীর্থ কন্ডোলিসা রইস এর ‛ইন্ডিয়ান ম্যানিফাস্টো’র মাধ্যমে।
এজন্যই আপনি দেখতে পাবেন, বিগত পাঁচ আগস্ট পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার যখন সার্ককে পুনর্জীবিত করার জন্য ভারতকে এপ্রোচ করলো, তখন ভারত সরাসরি নাকচ করে দেয়। শুধু নাকচ ক্ষান্ত হয়নি; তাদের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায় ‛সার্কের উত্থান হলে এই অঞ্চলে স ন্ত্রা স বাদের উত্থান হবে’। কিন্তু আসল কথা হলো, সার্কের উত্থান হলে এই অঞ্চলে বরং ভারতের স ন্ত্রা স বাদের নাটক মঞ্চস্থ করা কঠিন হয়ে যাবে।
এইযে বিগত কয়েকদিন যাবৎ বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর সুপরিকল্পিত পুশ ইন, বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত আট ব্যাটালিয়ন বিএসএফ সদস্য মোতায়েন ও একটি ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার এস্টেবলিশ, গুগল ম্যাপে বিএসএফ এর ক্যাম্পগুলো শো না করা, চট্টগ্রাম লাগোয়া ভারতের মিজোরামে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেভি কন্টিনজেন্ট ডিপ্লয়, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করতে ভারৎপন্থী সশস্ত্র গ্রূপের উচ্চসারির নেতাদের ভারতে অবস্থান এবং সর্বশেষ চিকেন নেকের নিকটে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইনফ্যান্ট্রি, মেকানাইজড, সিগন্যাল, আর্টিলারি, মাউন্টেন, এভিয়েশন ইউনিটের সমন্বয়ে হওয়া মিলিটারি এক্সারসাইজ ‛তিস্তা প্রহার’ একই সুতোয় গাঁথা। প্রতিটি ঘটনা বাংলাদেশের দিকে একটি স্পষ্ট বার্তা ছুঁড়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমরা কেউ কি প্রশ্ন করেছি ‛কেনো এমন হচ্ছে’.?
উত্তর হলো- এই মুহূর্তে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কোনো গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ নেই, কিভাবে আমরা ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবিলা করব.?
আগ্রাসন মানেই যে সামরিক আগ্রাসন তা তো নয়। আগ্রাসন প্রথম শুরু হয় দেশকে ভেতর থেকে দুর্বল করার মাধ্যমে। আর সার্বভার্সন বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগ রুখতেও বর্তমানে বাংলাদেশের কোনো গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ নেই। কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার শাসনামলে তা ছিল।
যেমন: যদি কখনও বহিঃশক্তির সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেই হয় সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর প্রতি জিয়াউর রহমানের পরিস্থিতি বিবেচনায় অফেন্সিভ রোল প্লে করার নির্দেশ ছিল। যা ‘আনকনভেনশনাল ওয়ারফেয়ার-১৯৮০’ নামে পরিচিত। যেখানে ইন্টারনাল ইন্সারজেন্সি, গেরিলা এন্ড এক্সোলারি এটাকের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।
আর এটাও কিন্তু সেই গ্র্যান্ড ন্যারেটিভেরই অংশ।
যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কোনো ন্যারেটিভ নেই তাই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরাশক্তি – দুই’ই নিজের শক্তিমত্তা আমাদের উপর যাচাই করে দেখতে চাইবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রাষ্ট্রের গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শত্রু যখন দেখবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি তার রুলস রেগুলেশন্স বাউন্ডারি স্পষ্ট করেছে- তখন সে একশবার ভেবে একটি পদক্ষেপ নেবে।