মানিকছড়িতে শিক্ষকের প্রহারে শিক্ষার্থী হাসপাতালে

খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে শিক্ষক কর্তৃক বেদম প্রহারে এসএসসি পরীক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারী ) দুপুর ১টার আগে উপজেলার গিরিকলি কিন্ডারগার্টেন ও পাবলিক স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কোচিং চলাকালে স্কুলের পিছনে হঠাৎ পর পর দুইবার আতশবাজির শব্দ হয়। এতে প্রশাসন থেকে স্কুলে ফোন আসলে শিক্ষকেরা তৎপর হয়। এক পর্যায়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী ( ব্যবসায় শাখা) মো. এমরান হোসেন ও শিশির মারমাকে সন্দেহ করে অফিসে তলব করেন সহকারী শিক্ষক মো. এমদাদ হোসেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মো. এমাদুল হক হোসেন শিক্ষার্থী মো. এমরান হোসেনকে বেদম মারধর করেন বলে পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গেছে
এ সময় শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে সহপাঠীরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। এরই মধ্যে কে বা কারা ৯৯৯ এ সাহায্য চেয়ে কল করেন। কল পেয়ে থানা পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পায়।
উল্লেখ্য, আহত শিক্ষার্থী মো. এমরান হোসেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হাসপাতাল বেডে শুয়ে জানান, এমাদুল স্যার সময়-অসময়ে ছেলে-মেয়েদের বকাঝকা ও জুতাপেটা করেন। এ নিয়ে অনেকবার স্কুলে শালিসও হয়েছে। আজও তিনি আতশবাজির ঘটনায় আমাকে সন্দেহ করে অফিসে ডেকে পাঠান। যাওয়া মাত্র আমার শরীরে গরম চা ছুঁড়ে মারেন। পরে চেয়ার থেকে উঠে আমার অণ্ডকোষ লক্ষ্য করে পর পর দুইবার লাথি মারেন। এতে আমি পড়ে গিয়ে চিৎকার করলে বন্ধুরা এসে আমাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়।
এ ছাড়া চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দীন জানান, স্কুল ছাত্রের অণ্ডকোষের ওপর অংশে ব্যাথা অনুভব করায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেন বলেন, ওই স্কুলের একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতীতেও ছাত্রদের মারধর ও অশ্লীল ভাষায় বকাঝকা করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করবো।
অভিযুক্ত শিক্ষক মো. এমাদুল হক জানান, স্কুল আঙ্গিনায় আতশবাজির বিষয়ে ছাত্রটিকে জিজ্ঞাসাবাদকালে সে গায়ের ওপর আঘাতের চেষ্টা করলে আমি কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারি। এতে সে অভিনয় করে নাটকের সূত্রপাত ঘটায় এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়। একজন ছাত্রের কাছে এ ধরণের আচরণ অপ্রত্যাশিত।
এছাড়াও অধ্যক্ষ মো. মমতাজ উদ্দিন বলেন, আতশবাজির বিষয়ে জানতে সেনাবাহিনী ফোন করার পর ছাত্রটিকে সন্দেহ হয়। এতে শিক্ষক তাকে জিজ্ঞাসাবাদকালে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে যায়। এ বিষয়ে শিক্ষকের অপরাধ থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা নিবে।
এ বিষয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনচারুল করিম বলেন, ৯৯৯ এর সংবাদে স্কুল পুলিশ যাওয়ার আগেই আহত ছাত্রকে সহপাঠীরা হাসপাতালে এনে ভর্তি করিয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের রাতে থানায় ডেকে বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।