মিয়ানমারকে হারিয়ে মূল পর্বের কাছাকাছি বাংলাদেশ

fec-image

৭ বছর আগে ঠিক ইয়াংগুনের এই মাঠেই ৫ গোল হজম করেছিল বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ দল যে বদলে গেছে তা আজ প্রমাণিত। নারী ফুটবল এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে এবারও গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল মিয়ানমার। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৭৭ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটিকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ চমক দেখিয়েছে। ঋতুপর্ণা চাকমার অসাধারণ দুই গোলে দারুণ এক প্রতিশোধও নেওয়া হয়েছে।

টানা দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ দল এখন মূল পর্বে খেলার কাছাকাছি আছে। তবে আজই চূড়ান্ত হতে পারে। একটু পরই গ্রুপে বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি ড্র কিংবা বাহরাইন হারলে তখন গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার টিকিট পাবে। তা না হলে ৫ জুলাই গ্রুপের শেষ ম্যাচে হবে নিষ্পত্তি।

ইয়াংগুনে শুরুর দিকে স্বাগতিকরা ম্যাচে ছড়ি ঘুরায়। কিক-অফের শুরুতে মিয়ানমার ভয় ধরায়। ডান প্রান্ত থেকে ক্রসে শি ইয়ে তুনের ডান পায়ের সাইড ভলি ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

৬ মিনিটে মনিকা চেষ্টা করলেও তার ক্রস সরাসরি গোলকিপারের হাতে জমা পড়ে।

১৮ মিনিটে ধারার বিপরীতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায়। ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহারকে ফেলে দিলে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক পায় বাটলারের দল। ঋতুপর্ণার শট মানব দেয়ালের নিচে লেগে ফিরে এলে বক্সের ঠিক বাইরে আবার বল পেয়ে রাঙামাটির ফুটবলার বাঁ পায়ের মাপা শটে ডিফেন্ডার ও গোলকিপারকে পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। এরপর আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ম্যাচ জমে ওঠে।

২৪ মিনিটে বাংলাদেশ আবার এগিয়ে যেতে পারতো। ঋতুপর্ণার ক্রসে তেকাঠির একদম সামনে থেকে ফাঁকায় শামুসন্নাহার প্লেসিং করলেও পোস্টে লেগে বলের দিক পরিবর্তন হলে আফসোস বাড়ে তাতে।

৩৭ মিনিটে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। গোলকিপার রুপনা পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ঠিকমতো বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। ভাগ্য ভালো তেকাঠির নিচে যাওয়ার আগেই মিয়ানমারের ১০ নম্বর জার্সিধারী কিন মো মোর লক্ষ্যে নেওয়া শট জালে জড়াতে পারেনি। চলে যায় বাইরে দিয়ে।

৪২ মিনিটে স্বাগতিকদের দুর্ভাগ্য। কিন মো মোর আরও একটি জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। সামনে থাকা ন হোয়াইয়ের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে গেলে হতাশ হন স্বাগতিক দর্শকরা। শেষ দিকে মিয়ানমার চাপ দিয়েও গোল শোধ দিতে পারেনি।

১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ।

বিরতির পরও খেলাতে ছিল টানটান উত্তেজনা।

৫৭ মিনিটে মিয়ানমারের একটি প্রচেষ্টা গোলকিপারের হাত ছুঁয়ে পোস্টে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

৬৮ মিনিটে ঋতুপর্ণার ক্রসে মনিকা তেকাঠির সামনে থেকে ঠিকঠাক প্লেসিং করতে পারেননি। বলে চলে যায় বাইরে।

৭১ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যবধান বাড়ায়। প্রতিপক্ষের একজনের পাস সতীর্থের কাছে যাওয়ার আগে ছিনিয়ে নিয়ে ঋতুপর্ণা বাঁদিক থেকে ক্ষিপ্রগতিতে দারুণ এক ক্রসে গোলকিপারের ওপর দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে। আনন্দে মাতে বাটলার অ্যান্ড কোং।

তিন মিনিট পর পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা গোলকিপারকে ডজ দিয়ে বদলি সুলতানার লং রেঞ্চে শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

৮৯ মিনিটে মিয়ানমার এক গোল শোধ দেয়। বাংলাদেশের রক্ষণের দুর্বলতায় উইন উইন গোল করে স্বাগতিকদের মনে আশার সঞ্চার করেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ঋতুপর্ণার দারুণ পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো শক্তিশালী মিয়ানমারকে হারিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে। স্বাগতিকদের দর্শকদের হতাশায় নিমজ্জিত করে।

বাংলাদেশের একাদশ: রুপনা চাকমা, আফঈদা খন্দকার (অধিনায়ক), শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, কোহাতি কিসকু, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, স্বপ্না রাণী, ঋতুপর্ণা চাকমা, শামসুন্নাহার ও তহুরা খাতুন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ, মিয়ানমার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন