মিয়ানমারে গোলাগুলির শব্দে কাঁপছে টেকনাফ সীমান্ত, সর্তক অবস্থানে বিজিবি

fec-image

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতে গোলাগুলি-বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের মানুষ। তবে ক’দিন আগেও থেকে থেকে গোলাগুলির শব্দ থাকলেও তা এখন কমে কখনও রাতে আবার কখনো দিনে শোনা যাচ্ছে। এছাড়া রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের গ্রামগুলোতে দেখা মিলছে আগুনের ধোঁয়ার কুন্ডিলিও।

টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকার লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তথ্য বলছে, মিয়ানমারের ওপার থেকে এখনো বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে। তবে এখন দিনে এক-দুইবার করে শুনা গেলেও সর্বশেষ গত শুক্রবার থেকে মাঝরাত শনিবার বিকাল পর্যন্ত ছিল ভয়াবহ অবস্থা। ওই সময় মর্টার শেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড বোমার বিস্ফোরণের ঘুম ভাঙ্গেছিল টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের। মাঝরাত থেকে শনিবার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত থেমে থেমে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। অসংখ্য বিকট শব্দের পাশাপাশি থেমে থেমে অন্তত ৪০-৫০ টির মতো মর্টারশেল ও শক্তিশালী গ্রেনেডের শব্দ পাওয়া যায়।

সীমান্তে বসবাস করা লোকজনের দেওয়া তথ্যে আরো জানা যায়, টেকনাফের নাফ নদীর পূর্ব পাশে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের কাদিরবিল, মংনিপাড়া ও সুদাপাড়া গ্রাম। এসব এলাকায় মানুষের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এরমধ্যে রোহিঙ্গাদের উল্লেখযোগ্য অংশ নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের লোকজনের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ড বাহিনী। গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে।

সাবরাং ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ শরিফ বলেন, প্রায় ৫০-৬০টি মর্টার শেলের শব্দ শুনেছেন। কয়েক মাসের বেশি সময় ধরে সীমান্তে এমন বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। ঘটনাগুলো মিয়ানমারের হলেও এপারের আতঙ্ক যাচ্ছেনা। এলাকার মানুষ ভালোভাবে ঘুমাতেই পারছে না। দিনের বেলা তো যেমন-তেমন। রাতের বেলায় বিকট শব্দেই আতঙ্কে থাকে এলাকার মানুষজন। জনগণের নিরাপত্তায় সেখানে বিজিবি টহল ও তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, মর্টার শেল, গ্রেনেড বোমার বিস্ফোরণের শব্দ এবং রাখাইন রাজ্যে আগুনের কুন্ডুলি দেখা যায়।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হলেও এপারের মানুষগুলোকে শান্তিতে থাকতে পারছে না। তবে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।

টেকনাফ ২-বিজিবির ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। রাখাইন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, মিয়ানমার, সীমান্ত উত্তেজনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন